বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। তাই এই মুহূর্তে দেশের মেরামত অত্যন্ত জরুরি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির উদ্যোগে কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক দিনব্যাপি এক কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তারেক রহমান। এ সময় তিনি ৩১ দফা সম্পর্কিত নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
তারেক রহমান বলেন, পতিত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় বসেছিল। তারা দেশের প্রতিটি সেক্টর ভেঙে দিয়ে গেছে। দেশকে পুরো ধ্বংস করে ফেলেছে। নির্দিষ্ট তারিখ না জানলেও আমরা জানতাম এদের পতন হবেই। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে চায়।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ঘোষিত ‘১৯ দফা’, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ‘২৭ দফা’ কর্মসূচির আলোকে ৩১ দফার রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই ৩১ দফার সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোরও ঐকমত্য রয়েছে। কমিশন গঠন করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে সব সংস্কার করতে চাচ্ছে তা সবই ৩১ দফায় রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারেক রহমান।
‘রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ততা’ কর্মসূচি সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে তারেক রহমান বলেন, আপনারা জনগণকে বলবেন আমরা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ দিব, একজন ব্যক্তি দুই বারের বেশি নির্বাচিত হতে পারবেন না। তখন জনগণ বলবে, সবই বুঝলাম। আমাদের দ্রব্য মূল্যে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, কর্মসংস্থানের কি হবে। তাই জনগণের এসব প্রত্যাশার দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে।
দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ঠিক করতে না পারলে, দেশের কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। তাই ঝড়, তুফান, বন্যা, খরা, বৃষ্টি যাই হোক না কেন; নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। এই লক্ষ্য পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে আমরা তাদের প্রতিহত করবো।
বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে। এর বড় কারণ হলো– দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। তারা বিশ্বাস করে দেশের ভালো বিএনপিই করে এবং আগামীতেও করবে। তাই বিএনপির প্রতি জনগণের এই আস্থা যে সব নেতা–কর্মী নষ্ট করতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এর আগে কীভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে নেতাকর্মীদের সে বিষয় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
কর্মশালায় বক্তারা উল্লেখ করেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ঘোষিত ‘১৯ দফা’, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ‘২৭ দফা’ কর্মসূচির আলোকে বর্তমান যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩১ দফার রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে। তাই সংগঠনের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আন্দোলনকে বেগবান করতে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে ও সহ–গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনের পরিচালনায় কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়া হালিমা আরলী, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টন, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।