বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সেক্টরে শনির আছর পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের দেড় দশকে ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা ও লাগামহীন দুর্নীতি করে অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের অর্থনীতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি প্রধান সূচকের (মূল্যস্ফীতি, নিম্নমুখী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, নিম্নমুখী রেমিট্যান্স প্রবাহ, চলতি হিসাবের ঘাটতি, রাজস্ব ঘাটতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার দরপতন) অবস্থান এতটাই শোচনীয়, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে এক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অথচ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। বিশ্ব অর্থনীতি গতি হারালেও থমকে যায়নি। অনেক দেশ মূল্যস্ফীতি কমাতে সফল হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। বিশ্ব অর্থনীতি গতি হারালেও থমকে যায়নি। অনেক দেশ মূল্যস্ফীতি কমাতে সফল হচ্ছে। অথচ আমাদের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে তো পড়ছেই। যেভাবে জোড়াতালি দিয়ে অস্বচ্ছ ও সমন্বয়হীনভাবে সমস্যাগুলোর সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, তাতে অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে।
ফখরুল বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারে না, হতদরিদ্র মানুষ পেট ভরে দু‘বেলা খেতে পারে না, অন্যদিকে আওয়ামী স্বৈরশাসকেরা উন্নয়নের গালগল্প করে দেশটাকে ঋণের জালে জর্জরিত করে দেউলিয়ার পথে ঠেলে দিয়েছে। উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ সরকার সর্বগ্রাসী দুর্নীতি করছে।
নজিরবিহীন মন্থরগতিতে চলছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাঁচামাল এবং মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। অর্থাৎ বিনিয়োগ কমছে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও কমছে। আমদানি নির্ভর অর্থনীতির জন্য এ এক মহা চ্যালেঞ্জ। তার উপর রয়েছে স্বার্থান্বেষীদের সিন্ডিকেট। মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। মানুষ সঞ্চয় ভেঙ্গে খাচ্ছে। অনেকের সঞ্চয়ও শেষ। নিম্নবিত্তের নাভিশ্বাসতো আছেই।
মির্জা আলমগীর বলেন, আর্থিক খাতসহ দেশে আইনের শাসন ও সার্বিক শৃঙ্খলার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে জবাবদিহিতা। যেহেতু বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই, তাদের হাতে আমাদের এই দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি, বিচার ব্যবস্থা কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। তাই দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহ্বান, আসুন বাংলাদেশে একটি সত্যিকার জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি এবং দুঃসহ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের অবসান ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করি। তাহলেই ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামূলক সরকার ব্যাংকিং সেক্টর তথা সামগ্রিক অর্থনীতিকে চরম বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করে টেকসই উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ