মসলা হিসেবে রান্নায় ব্যবহার করা হয় দারুচিনি। খাবারে চমৎকার সুগন্ধ নিয়ে আসে এটি। পুষ্টিগুণের দিকে থেকেও বেশ এগিয়ে এই মসলা। ক্যালোরি, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ছাড়াও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎস দারুচিনি। বিবিসিতে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে পুষ্টিবিদ জো লেউইন জানাচ্ছেন দারুচিনি খেলে কোন কোন উপকার মিলবে।
দারুচিনির বাকল গাছের ছালের চেয়ে পাতলা, হলুদ এবং বেশি সুগন্ধযুক্ত। দারুচিনি সুগন্ধি মসলা হিসেবে দারুণভাবে পরিচিত। এটি শুধু রান্নায় গন্ধ বৃদ্ধি নয়, শরীর ও ত্বক উভয়ের জন্যই দারুচিনি উপকারী। এর অনেক জাদুকরি স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।
১. দারুচিনি হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দারুচিনি ট্রাইগ্লিসারাইড এবং মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। আর এ দুটিই হৃদ্রোগের ঝুঁকির কারণ। এ ছাড়া আপনি যদি টানা ৪ সপ্তাহ দারুচিনি নিয়মিত খান, তাহলে রক্তচাপ কমে যাবে।
২. দারুচিনি ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলতে পারে। মূলত দারুচিনির নির্যাস ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি হ্রাস করে এবং টিউমারে রক্তনালী তৈরি করে।
৩. দারুচিনি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। তাই দারুচিনি স্বাস্থ্যের জন্য অনকে উপকারী।
৪. দারুচিনিতে অবিশ্বাস্যভাবে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। এই মসলা এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর শক্তিশালী অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর এ কারণে এটি আপনার শরীরকে সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে এবং টিস্যুর ক্ষতি মেরামত করতে সহায়তা করতে অনেক কার্যকরী।
৫. দারুচিনি রক্তে শর্করা হ্রাসকারী বৈশিষ্ট্যের জন্য সুপরিচিত। দারুচিনির অ্যান্টি–ডায়াবেটিক প্রভাব রয়েছে এবং এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ১০ থেকে ২৯৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। আর এর উপকার পেতে আপনি চায়ের সঙ্গেও দারুচিনি খেতে পারেন।
৬. মস্তিষ্কের কোষগুলোর গঠন বা কার্যকারিতার প্রগতিশীল ক্ষতি থেকে নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ হয়ে থাকে। আর এ ধরনের রোগে উপকারী হিসেবে কাজ করতে পারে দারুচিনি। পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত ইঁদুরের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা যায়, দারুচিনি নিউরন রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রা স্বাভাবিক করে।
৭. দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে পারে দারুচিনি।
৮. এতে সিনামালডিহাইড নামক একটি উপাদান আছে যা ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৯. ঠান্ডা–কাশি উপশম করতে সাহায্য করে এই মসলা।
১০. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে দারুচিনি। এটি রক্তের প্রবাহে প্রবেশ করে এমন গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
১১. নিয়মিত দারুচিনি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে দাবি করছে কিছু গবেষণা।
১২ দারুচিনিতে প্রোবায়োটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই দারুচিনি নিয়মিত খেলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে। ফলে হজমের সমস্যা দূর হয়।
সুপ্তি/ দীপ্ত সংবাদ