নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ২নং কাশিমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী ত্রিমোহনী হাটে গত কিছুদিন ধরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত খাজনার চেয়ে ১০ গুণ বেশি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। প্রতিবছরই এই সমস্যার সম্মুখীন হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
শতবর্ষী এই হাটে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার বাজার বসে এবং সেখানে ক্রেতা–বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত খাজনা আদায় করা হয়। তবে এবার গত শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধানের চারার খাজনা হিসেবে ক্রেতাদের কাছ থেকে ৪০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে, যা সরকারি নিয়মের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত খাজনা মাত্র ৪ টাকা হলেও, তা না মেনে ৪০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এছাড়া, ভ্যানগাড়ী ও অন্যান্য পণ্যের জন্যও অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের ঘটনা ঘটছে। বিক্রেতাদের কাছ থেকে সরকারি নির্ধারিত ৫ টাকার জায়গায় ১০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এমনকি আলু, পেঁয়াজের চারা এবং অন্যান্য পণ্যের জন্যও অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
ত্রিমোহনী হাটে আসা এক ক্রেতা আব্দুস জানান, তিনি ত্রিমোহনী হাট থেকে ৩ পণ জিরাশাইল ধানের চারা কিনেছেন। কিন্তু খাজনা হিসেবে প্রথমে ১২০ টাকা দাবি করা হয়। অনেক অনুরোধের পর ৩ পণ ধানের চারা থেকে ১০০ টাকা খাজনা আদায় করা হয়।
ক্রেতা ও বিক্রেতারা জানান, অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে এবং তাদের হাতে কোনো রশিদ দেয়া হচ্ছে না। ফলে তারা জানেন না, ঠিক কতটুকু খাজনা আদায় করা হচ্ছে। এমনকি স্থানীয়রা এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলেও কোনো ফল পাচ্ছেন না।
দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত খাজনা আদায় ও অন্য অনিয়মের কারণে স্থানীয় ক্রেতা–বিক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যাতে এই অনিয়ম বন্ধ হয় এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত হয়।
ত্রিমোহনী হাটের অন্যতম ইজারাদার ও ২নং কাশিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. বেদারুল ইসলাম জানান, হাটের বিভিন্ন স্থানে সাব ইজারা প্রদান করা হয়েছে। কিছু সাব–ইজারাদার অতিরিক্ত খাজনা আদায় করতে পারে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শুধু বিক্রেতার কাছ থেকেই খাজনা আদায় করার কথা, অথচ ত্রিমোহনী হাটে ক্রেতাদের কাছ থেকেও খাজনা আদায় করা হচ্ছে কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি প্রধান ইজারাদারের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। তবে, তিনি দ্রুত হাটে পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।