গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনি। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নিহত হয়েছেন ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরাইলি বাহিনীর সরাসরি গুলিতে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রবিবার (২০ জুলাই) গাজার উত্তরাঞ্চলের জিকিম ক্রসিং, দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ ও খান ইউনিসে ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় দখলদার বাহিনী। এতে অন্তত ৯২ জন নিহত হন।
জিকিমে হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান ফিলিস্তিনি রাইজেক বেতার। তিনি বলেন, “আমরা একজন আহত যুবককে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি। পরে আমার সাইকেলে করে তাকেই হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই, খাবার নেই, জীবন নেই। আমরা কেবল টিকে থাকার চেষ্টা করছি।”
এ অবস্থায় হামাস, ইসলামিক জিহাদসহ কয়েকটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী এক যৌথ বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, পরিকল্পিতভাবে ক্ষুধা, বোমা হামলা ও অবরোধের মাধ্যমে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। তারা এই পরিস্থিতির জন্য দখলদার নেতানিয়াহুর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশের নীরবতা ও সহযোগিতাকেও দায়ী করেছে। তাদের মতে, এই মানবিক বিপর্যয় আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধের শামিল।
জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ–এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষ মানুষের তৈরি বিপর্যয়।” তার ভাষায়, সীমান্তে তিন মাসের খাদ্য মজুত থাকা সত্ত্বেও গত মার্চ থেকে গাজায় এক ছিটেফোঁটাও প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবই এই মানবিক সংকটের মূল কারণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, জ্বালানিসংকটের কারণে বহু হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।