রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪

তিন-চারদিন ধরে এসেও আলু পাচ্ছি না

আলুর মূল্য নির্ধারণ করার পর থেকে হিমাগারে এসে আলু কিনতে পারছে। তিনচারদিন ধরে হিমাগারে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে। কোনো বেপারী আলু বিক্রি বা বাজারজাত করছে না। সরকারি নির্ধারিত মূল্য দূরের কথা ৩০ টাকা কেজি দরে পাইকারি আলু কিনতে পারছেন না পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী। শুধু মোহাম্মদ আলী নয় এমন শতাধিক খুচরা বিক্রেতা রয়েছে যারা সরকারি মূল্যে আলু কিনতে না পেরে হতাশ।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকার দেয়া কোল্ড স্টোরেজ ও এলাইড কোল্ড স্টোরেজসহ বেশ কয়েকটি হিমাগারে এমন চিত্র দেখা গেছে।

মোহাম্মদ আলী বলেন, আগে কোল্ড স্টোরেজ থেকে ১৬০০ টাকা থেকে ১৮০০ করে প্রতি বস্তা আলু কিনে ২২০০ টাকা থেকে ২৩০০ টাকায় বিক্রি করতাম। কিন্ত আলুর দাম নির্ধারণ করার পর এখন আর আলু কিনতে পারছি না। তিনচারদিন হলো বেপারী আলু বিক্রি করছে না। আলুগুলো স্টোরেজে মজুদ করে রেখেছে বেশি দাম পাওয়ার আসায়।

গত বছর এ সময়ে আলু দাম ১৬ টাকা থাকলে এ বছর আলুর এমন অস্বাভাবিক মূল্য বেড়ে যাওয়া ক্ষুব্ধ দিনমজুর থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষ। এমন এক দিনমজুর অলিউল্লাহ বলেন, আমরা কিছু অসাধু ব্যাবসায়ীদের কাছে জিম্মি। আলুর দাম আর চালের দাম এখন সমান। দিন দিন যদি আলু সহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের উপায় থাকবে না। তিন বেলার জায়গায় এক বেলা খেয়ে থাকতে হবে।

জেলাতে ১০ লক্ষ মেট্রিক টনের চেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। ৬৩টি হিমাগারে এখনো মজুদ রয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন। এই আলুগুলো ঠিক মত সরবরাহ করেছে সংশ্লিষ্টরা। আলু মজুদ রেখে ব্যবসায়ীরা তৈরি করছে কৃত্রিম সংকট। এতে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

পাইকারি ২৭ টাকা বিক্রি ও খুচরা ৩৭ টাকা বিক্রির কথা থাকলেও সেটা মাঠ পর্যায় বাস্তবায়ন হচ্ছে না। হিমাগারে থেকে পাইকারি ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও স্টোরেজের রেজিষ্টার খাতা, দলীয় কিংবা পাকা রশিদে দেখানো হচ্ছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ২৭ টাকা কেজি দরে।

মুক্তারপুরের পুরনো ফেরিঘাট এলাকায় এলাইড কোল্ড স্টোরেজের আলু ব্যাবসায়ী মো. আলম বেপারী বলেন, গতকাল ডিসি স্যার কোল্ড স্টোরেজ মালিক, ব্যাবসায়ী ও কৃষকদের সাথে কথা বলে ৩০ টাকা কেজি দরে পাইকারি আলু বিক্রি করার অনুমতি দেন। বৃহস্পতিবার আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এই দরে আলু বিক্রির জন্য বলা হয়েছে। তাই আমরা ৩০ টাকা কেজি দরে পাইকারি আলু বিক্রি করছি।

পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ৩০টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের পক্ষ থেকে পাইকারি ২৭ টাকা ও খুচরা ৩৭ টাকা কেজি দরে বিক্রয়ের জন্য মাইকিং করা হয়েছে।

তবে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ৩০ টাকা করে বিক্রি করার কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি। আদেশ দেওয়া হয়েছে বাজারে খুচরা মূল্য সর্বোচ্চ ৩৭ টাকা করে বিক্রি করার। তিনি আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বুধবার থেকে আগামী তিনদিনের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ থেকে ৫৬ হাজার বস্তা সরকার নির্ধারণ মূল্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে। কেউ যদি এর ব্যাতিক্রম করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

কায়সার হামিদ/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More