তাস খেলার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মাগুরায় প্রতিপক্ষের হামলায় ১০বাড়ি ভাংচুর হয়েছে। সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) ৮টার দিকে সদর উপজেলার আমুড়িয়া গ্রামের উত্তর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, আমুড়িয়া উত্তর পাড়ার বাহার মোল্যা (৩৬) ও আরিফ মোল্যা (২৮) এক সাথে বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিয়ে তাস খেলে আসছিলো। এই তাস খেলার নিয়ে দুইজনের মধ্যে বিরোধ হয়। আরিফ দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে সে বাহার মোল্যার কাছে তাস খেলার বকেয়া ১১ হাজার টাকা পাবে। কিন্তু বাহার মোল্যা বিষয়টি অস্বীকার করে বলে আরিফ তার কাছে কোন টাকা পাবে না।
এ নিয়ে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার আমুড়িয়া গ্রামের উত্তরপাড়া স্থানীয় রাজ্জাকের দোকানের সামনে বাহারের কাছে ১১ হাজার টাকা দাবি করে আরিফ। ওই সময় দুই জনের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এ সময় বাহার আরিফকে ধাওয়া করলে আরিফ সেখান থেকে দৌঁড়ে সরে পড়ে। পরবর্তীতে আরিফ তার লোকজন নিয়ে রাত ৮টার দিকে বাহারের বাড়িতে এসে বাহারকে খুঁজতে থাকে। বাহার বাড়িতে না থাকায় আরিফের লোকজন তার বাড়ি ঘর হামলা করে ভাংচুর করে। হামলাকারীরা আরো ৮ জনের বাড়ি ঘরে ভাংচুর করে। হামলায় অন্তত ১০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাড়িঘর ভাংচুর
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাহার মোল্যা জানান, আমি ১ বছর ধরে কোন তাস খেলার সাথে জড়িত নই। কিন্তু হঠাৎ করে আরিফ রবিবার সন্ধ্যায় মিথ্যা ১১ হাজার টাকা দাবি করে আমাকে বিরক্ত করে। এ সময় আমি তাকে নিষেধ করলে সে বাড়িতে ফিরে যায়। এরপর রাত ৮টার দিকে আরিফ তার পক্ষে সামাজিক নেতা নওশের আলী, আবজাল মোল্যা ও সাবেক মেম্বার মশিয়ারের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে। হামলাকারীদের আঘাতে আমার উত্তর পোতার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া স্থানীয় কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আবু বক্কার, সাবু মোল্যা, মতিউর খা, মুস্তাকিম, বকুল, ইকরাম, আব্দুল জলিল ও শাহাজাহানের বাড়িতে আক্রমন করে ভাংচুর করে। হামলায় অন্তত ১০টি বাড়ি–ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলাকারীরা বাড়ির নারীতে মারধর করে। পাশাপাশি ঘরে থাকা ১টি ল্যাবটব, সোনার চেইনসহ ঘরে থাকা বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। যা ৫ পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরর প্রস্তুতি চলছে।
অন্যদিকে আরিফ জানান, আমি বাহারের কাছে কর্জের ৩৫ হাজার টাকার পেতাম। ইতিপূর্বে ২৪ হাজার টাকা পরিশোধ করে। রবিবার সন্ধ্যায় বাহারের কাছে বাকি ১১ হাজার টাকা চাইলে বাহার ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাকে ধাওয়া করে। এসময় তারা আমার বাড়ির উপর আসে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের লোকজন তাদের বাড়িতে যায়।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করে। কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এলাকায় পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।
শ্রাবণ / আল / দীপ্ত সংবাদ