পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তরুণরা যে দেশপ্রেম ও সাহসিকতা দেখা গেছে তা দেশে আন্দোলনের এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আন্তঃকলেজ সাংস্কৃতিক ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস–চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
আন্তঃকলেজ সাংস্কৃতিক ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে প্রকৃতির নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তাই প্রকৃতিবিরোধী যেকোন উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যাপারে জনসচেতনতার প্রয়োজন আছে।
সভাপতির ভাষণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস–চ্যান্সেলর বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রায় আড়াই হাজার কলেজে অধ্যয়নরত দেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তুলতে পুরনো সিলেবাস সংস্কারের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের শিক্ষিত তরুণদের দক্ষ করে তুলতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে চলছে, আর এর জন্য সরকারের টেকনিক্যাল ও পলিসি সহায়তা বিশেষ প্রয়োজন।
ড. আমানুল্লাহ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খরচে ৫০ হাজার কলেজছাত্রীকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তোলার পদেক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার ভিত্তিক ও কর্মমুখী দক্ষতা বাড়ানোর জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে এটুআই, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ইউনিসেফসহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। তিনি বলেন, দেশের শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদানে সংস্কার ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে অভ্যুত্থান ঘটানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস–চ্যান্সেলর ও স্পোর্টস বোর্ডের সভাপতি প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান, প্রো–ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ নূরুল ইসলাম এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম বক্তৃতা প্রদান করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক দপ্তরের পরিচালক ও স্পোর্টস বোর্ডের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শফিউল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক, বিভাগীয় প্রধান, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় পর্যায়ে আন্তঃকলেজ সাংস্কৃতিক ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস–চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
এর আগে সকালে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস–চ্যান্সেলর ও স্পোর্টস বোর্ডের সভাপতি প্রফেসর মোঃ লুৎফর রহমান। জাতীয় পর্যায়ের এ প্রতিযোগিতায় ১১টি ইভেন্টের চূড়ান্ত পর্বে মোট ১৮৪ জন ছাত্র–ছাত্রী অংশ নেয়। ইভেন্টগুলো হলো উপস্থিত বক্তৃতা, লোকগীতি ও গণসংগীত, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়, দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, নৃত্য, সৃজনশীল দলীয় নৃত্য ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা। অনুষ্ঠানে জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।