শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

লালমনিরহাটে তথ্য চাওয়ায় পাঁচ সাংবাদিককে আটকে রাখলেন এসিল্যান্ড

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

লালমনিরহাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের বিরুদ্ধে জমি খারিজ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়ায় পাঁচ সাংবাদিককে নিজ অফিসে আটকে রেখে গালিগালাজ করে জেলে পাঠানোর হুমকি দেবার অভিযোগ উঠেছে

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এসিল্যান্ড অফিসের তিনজন অফিস সহকারী ভূমি সংক্রান্ত শুনানি করছিলেন। সেখানে এসিল্যান্ড উপস্থিত ছিলেন না। মাইটিভি ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার প্রতিবেদক মাহফুজ সাজু ওই শুনানির ভিডিও ধারণ করেন। এতে অফিস সহকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এসিল্যান্ডকে ডেকে আনেন।

সাংবাদিকরা আরও জানান, এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহআলনোমান সরকার আসার পর মাহফুজ সাজু জানতে চান যে এসিল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে অফিস সহকারীরা ভূমি সংক্রান্ত শুনানি করতে পারেন কি না। এই প্রশ্ন করায় এসিল্যান্ড ক্ষিপ্ত হন এবং তার নির্দেশে অফিস ফটকে তালা লাগিয়ে মাহফুজকে আটকে রাখা হয়। এ খবর পেয়ে সাংবাদিক নিয়ন দুলাল, এসকে সাহেদ, ফারুক আহমেদ ও কাওছার আহমেদ ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও আটকে রাখা হয়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহফুজ সাজু বলেন, ‘সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত খারাপ আচরণ করা হয় এসিল্যান্ড অফিসে। এ বিষয়ে তথ্য নিতে গিয়ে সত্যতা পাই। সেইসঙ্গে দেখতে পাই যে এসিল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে শুনানি হচ্ছে। এ বিষয়ে তথ্য চাইতেই এসিল্যান্ড আমাকে এবং পরবর্তীতে আমার সহকর্মীদেরও আটকে রাখেন।

মাহফুজ আরও বলেন, ‘এসিল্যান্ড সাংবাদিকদের সম্পর্কে খুবই অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি আমাদেরকে জেলে পাঠানোর হুমকিও দিয়েছেন।

দৈনিক কালবেলা পত্রিকার লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি এসকে সাহেদ বলেন, ‘এসিল্যান্ড খুবই রূঢ় আচরণ করেছেন। সাংবাদিক সম্পর্কে এত কুরুচিকর মন্তব্য একজন সরকারি কর্মকর্তা করতে পারেন, তা ভাবতেও পারিনি।

পরে পাঁচ সাংবাদিককে আটকে রাখার প্রায় ৪০ মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি. এম. . মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিস গেটের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন।

জানা যায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতেও এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহআলনোমান সাংবাদিকদের অপদস্থ করেন। এ সময় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

কিন্তু সাংবাদিকসহ সবাই ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পর সবার শেষে ঘটনাস্থল ত্যাগ করা চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরাপার্সনের মোটরসাইকেল আটকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহআলনোমান সরকার।

চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরাপার্সন আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমার মোটরসাইকেলের সব কাগজপত্রই আছে। কিন্তু ঘটনার সময় সেগুলো সাথৈ ছিল না। আমি এসিল্যান্ডের কাছে মাত্র ১০ মিনিট সময় চেয়েছিলাম কাগজগুলো আনাতে। কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ থাকায় আমাকে সেই ১০টা মিনিট সময়ও দেননি, ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

এ ঘটনার পর সাংবাদিকরা শহরের মিশনমোড়ে লালমনিরহাটবুড়িমারী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি. এম. . মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা অবস্থান ধর্মঘট তুলে নেন।

 

মাহমুদুল/ সুপ্তি/ দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More