ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে এবার দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি তলিয়ে যেতে পারে। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের লোকসংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। বঙ্গোপসাগরের মধ্যে আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপটি ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দ্বীপের বড় একটি অংশ সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। তার মতে, মোখার আঘাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ভূ–অবকাঠামোর বড় ক্ষতি হবে। এতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটবে।
বাংলাদেশ সময় শনিবার (১৩ মে) বিকেল ৩টায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেল রান থেকে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় মোখার স্থলভাগ আঘাতের স্থান পর্যালোচনা করে বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে পলাশ তার ফেসবুক প্রোফাইলে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা পুরো কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়েই অতিক্রম করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়া, মহেশখালী দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপন্ন। সেন্টমার্টিন দ্বীপের বড় একটি অংশ সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাবে। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা আছে।
তিনি বলেন, মোখার আঘাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ভূ–অবকাঠামোর বড় ক্ষতি হবে। এতে মানুষের প্রাণহানি হবে। কমপক্ষে দ্বিতীয় বা তার ওপরের তলার ভবনে আশ্রয়ের ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে বড় প্রাণহানির শঙ্কা আছে।
এদিকে সকাল ৯টা থেকে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণপাড়া ও হলবনিয়া গ্রাম থেকে লোকজনকে সরানো কাজ শুরু হয়েছে। সঙ্গে আগেভাগে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য এলাকায় চালানো হচ্ছে প্রচারণা।
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শনিবার সকাল থেকে গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি, তবে ঝড়বৃষ্টি নেই। সাগর উত্তাল রয়েছে। দ্বীপের মাছ ধরার তিন শতাধিক ট্রলার আগেভাগে টেকনাফের খায়ূকখালী খাল ও শাহপরীর দ্বীপে পাঠানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার খবরে দ্বীপের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে আগেভাগে পরিবার নিয়ে টেকনাফে চলে গেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হলে দ্বীপের অধিকাংশ ঘরবাড়ি বিলীন হতে পারে। কারণ দ্বীপের ৯০ শতাংশ মানুষের ঘরবাড়ি ত্রিপলের ছাউনিযুক্ত, বাঁশ ও পলিথিনের বেড়ার।
যূথী/দীপ্ত সংবাদ