ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের হেফাজতে মো. আকরাম হোসেন নামক এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। থানা থেকে আদালতে নিয়া যাওয়ার সময় রাস্তায় তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ৪০ বছর বয়সী আকরাম হোসেন হরিপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ছিলেন। তিনি উপজেলার হাটপুকুর গ্রামের আব্দুল তোয়াবের ছেলে।
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামিমুজ্জামান বলেন, পুলিশ দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখানে আসার আগে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
পরিবার ও স্বজনরা অভিযোগ করেন, পুলিশের নির্যাতনেই আকরামের মৃত্যু হয়েছে। একই অভিযোগ করছে; এক সময় আকরামের রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপি।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ শেখ মৃতের পরিবারের ও বিএনপির অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ্য করে জানান, ১১০ পিচ টাপেন্টাডোল ট্যাবলেটসহ আকারম হোসেন (৪০) শফিকুল ইসলাম (৩২) আবু হানিফ (৪৯) নামে ৩ জন আসামিকে রবিবার রাত ২টা ৫০ মিনিটে মাদকবিরোধী অভিযানে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে মামলা করে সোমবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে আসামিদের ঠাকুরগাঁওয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানোর সময় আকরাম হোসেন অসুস্থ বোধ করলে চিকিৎসার জন্য তাকে তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মারা যান তিনি।
এছাড়াও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পুলিশ স্কট এর মাধ্যমে হরিপুর থানা হতে আকারম হোসেনকে বিজ্ঞ আদালতে নেয়ার জন্য থানা থেকে রওনা দেয়। পথে আকরাম হোসেন শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলে তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হরিপুরে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেনের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধমে জানায়, আকরাম হোসেন হরিপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব। আকরাম হোসেন পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু বরণ করেছেন।
এদিকে পুলিশ কর্তৃক আকরাম হোসেনকে পৈশাচিক, নির্দয় ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আকরাম হোসেনকে হত্যার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো; আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবেই হত্যায় উৎসাহী একটি রাজনৈতিক দল। এরা শুধু গণতন্ত্রকেই হত্যা করেনি, গণতন্ত্রকামী মানুষকে এখন বেছে বেছে হত্যা করছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব ও জনগণকে অরক্ষিত রেখে এরা বিএনপিসহ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
সারাদেশে যখন দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে তখন জনগণের দৃষ্টিকে অন্যত্র সরানোর জন্য ডামি সরকার রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে। দেশে আওয়ামী শাসন কায়েমের জন্যই আইনের শাসনকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এখন চরম হুমকির মুখে।
পবিত্র রমজান মাসে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী রক্ত ঝরানোর নিষ্ঠুর কাজ থেকে সরে আসছে না। তবে অবৈধ আওয়ামী সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের অবসান না হওয়া পর্যন্ত জনগণ রাজপথের আন্দোলনে আছে এবং থাকবে।
মঈনুদ্দীন তালুকদার/ এজে/ দীপ্ত সংবাদ