ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার বানুকে রক্ষা করতে জোরপূর্বক শিক্ষকদের কাছ থেকে লিখিত প্রত্যয়ন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও তদন্তের দিন আত্মসাৎ করা টাকার সামগ্রী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের পরিবর্তে বিতরণ করা হয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে।
জানা গেছে, ২০১৯–২০ অর্থবছরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য এ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণের জন্য কালীগঞ্জ উপজেলায় বরাদ্দ আসে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা। বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় না করে সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন। এরপর এ ঘটনা তদন্তে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক আহমেদকে তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয়। তিনি ১০মে ঘটনা তদন্তে তিনজনকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তলব করেন।
কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে উপস্থিতপূর্বক তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ অভিযুক্তদের সাথে গোপন আঁতাত করে ওইদিন (১০মে) ১০ টার দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের কাছে ২ টি হুইল চেয়ার ও ৫ টি শ্রবণযন্ত্র বিতরণ করেন।
সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে প্রধান শিক্ষকগণ এই সব উপকরণ গ্রহণ করে দ্রুত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ত্যাগ করেন। এ সময় অভিযুক্ত সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ অভিযুক্ত সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে রক্ষা করতে উপজেলা ৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক লিখিত প্রত্যায়ন নেন।
সিংদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম জানান, ২০১৯–২০২০ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের এ্যাসিসটিভ ডিভাইস দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি বুধবার (১০ মে) সকালে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে এ ডিভাইস গুলো বিতরণ করেন সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে পুনরায় ডেকে লিখিত প্রত্যায়ন নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক আহমেদ জানান, তদন্তের জন্য তিনজনকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তের দিনই কোন সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে কিনা তিনি কিছুই জানেন না।
আফ/দীপ্ত সংবাদ