নওগাঁ জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের পতিত জমিতে ১৮ রকমের সবজির বাগান করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন জেলা কমান্ড্যান্ট মো: জহুরুল ইসলাম। প্রায় ১৫শতাংশ পতিত জমির সবজির বাগানে উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজি দিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জেলার ১১টি উপজেলা কার্যালয়সহ আশেপাশের মানুষদের মাঝে উদ্বৃত সবজি সরবরাহ করা হচ্ছে। সবজির পাশাপাশি রোপন করা হয়েছে বিভিন্ন জাতের আম ও অন্যান্য ফল গাছ। চলতি মৌসুমে থোকায় থোকায় ঝুলছে নানা জাতের আম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চারদিকে ইটে ঘেরা পতিত জমি এখন সবুজ ফসলের মাঠ। বিভিন্ন ব্লকে শোভা পাচ্ছে নানা জাতের গ্রীষ্মকালীন সবজি। আড়ানীতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের লাউ, ঝিঙ্গে, মিষ্টি কুমড়া, পটল, করলা, শসা, চালকুমড়া, বরবটি, ধুন্দল। বেগুন গাছে ঝুলে আছে নানা জাতের রঙ্গিন বেগুন। এছাড়াও মাটির বিভিন্ন ব্লকে পুঁইশাক, কলমি শাক, বিভিন্ন ডাটা, পুদিনা, পাটশাক, মরিচ, পেঁপে। এছাড়াও সম্প্রতি রোপন করা হয়েছে মালবেরিসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ফলদ গাছ। প্রধান কার্যালয়ের সামনে এমন সবুজ দৃশ্য দেখে বিমোহিত সকল সদস্য ও সেবা প্রত্যাশীরা।
জেলা কার্যালয়ে কর্মরত সদর উপজেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মামুন, অফিস সহায়ক খায়রুল বাসার, এপিসি লুৎফর রহমান বলেন জহুরুল ইসলাম স্যারের অনুপ্রেরণায় ও সার্বিক সহযোগিতায় এই বিশাল পতিত জায়গায় আমরা নিজেরাই সবজির বাগান তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণ করি। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি অবসর সময়ে এই বাগানে কাজ করতে অনেক ভালো লাগে। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন আমরা নিজেদের খাবারের জন্য বাগানকে বিভিন্ন রকমের সবজি উত্তোলন করি। এতে করে এই বাগানকে একদিকে আমরা যেমন বিষমুক্ত সবজি পাচ্ছি অপরদিকে বাজার চড়া দামে সবজি না কেনার কারণে অনেক অর্থ সাশ্রয় করতে পারছি। পতিত জমিতে এমন সমন্বিত সবজির বাগান করতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত।
সবজি চাষ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা কমান্ড্যান্ট মো. জহুরুল ইসলাম (বিভিএমএস) বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা “যার যতটুকু ফাঁকা জায়গা আছে, বাড়ির আশেপাশে শাক–সবজি চাষ করুন। বাড়িতে ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট যেন না পরে সেই লড়াই করুন। এদেশের উর্বর মাটি, আপনাকে খাদ্যের যোগান দিতে প্রস্তুত। তাই আসুন আমরা এক ইঞ্চি জমিও ফেলে না রেখে সাধ্যমতো চাষাবাদ করি” মোতাবেক পতিত জমিতে সবজির চাষ শুরু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করি। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী “শেখ হাসিনার ফসলি উঠোন, গণভবনে বাংলার মুখ” প্রতিবেদনটি দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং মহাপরিচালক মহোদয়ের সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য অনুসরণ করে প্রায় ৬ মাস আগে পতিত ১৫ শতাংশ জমিতে সবজির বাগান তৈরির কার্যক্রম শুরু করা হয়। বাগানের অবকাঠামোগত কাজ শেষে প্রায় ৩মাস আগে বিভিন্ন রকমের শাক–সবজি, ফুল ও ফল চাষ শুরু করা হয়।
তিনি আরো বলেন, আমরা সম্পন্ন প্রাকৃতিক উপায়ে জৈব সার ব্যবহারের মাধ্যমে সবজি চাষ করে আসছি। বাগানে উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজি দিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কার্যালয়ে কর্মরত আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা বিভিন্ন সময় দু:স্থ ও অসহায় গরীব মানুষকেও বাগানের সবজি বিতরনের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টির যোগান দেয়াও সম্ভব হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থীদের আমরা বাড়ির আশেপাশের পতিত জমিতে সবজি চাষের পরামর্শও প্রদান করে আসছি। আমি আশাবাদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে অনুসরন করে যদি আমরা সবাই এভাবে পতিত জায়গায় সাধ্য মতো সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ শুরু করি তাহলে আমরা বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে রের্কড করার পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করতে সক্ষম হবো। আমি শতভাগ আশাবাদি যে আগামীতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
এফএম/দীপ্ত সংবাদ