করদাতারা প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে সব কটি তথ্য ‘শূন্য’ হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর বলছে, সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে বর্তমান আয়কর আইনের ৩১২ ও ৩১৩ ধারা অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।
রবিবার (১০ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সব কটি তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। করদাতার জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নে তাঁর আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়–সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে বর্তমান আয়কর আইনের ৩১২ ও ৩১৩ ধারা অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল–বিষয়ক কতিপয় ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত পোস্ট এনবিআর–এর নজর এসেছে। এসব পোস্টে রিটার্ন ফরমের সব কটি ঘর ‘শূন্য’ হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন জমা দেওয়া যায় বলে ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করা হচ্ছে। এসব ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাঁদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন, এমন জানা যায়।
এনবিআর আরও বলেছে, আয়কর আইন অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তাঁর প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে।
আয়, ব্যয়, সম্পদ বা দায়সংক্রান্ত বিষয়ে রিটার্নে সঠিক ঘোষণা প্রদান করা একজন করদাতার নাগরিক ও আইনি দায়িত্ব। করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাঁকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে কর প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য–উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোনো সুযোগ আয়কর আইনে নেই।
এনবিআর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সব করদাতা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আয়কর রিটার্নে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হবেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত প্রতারণামূলক জিরো রিটার্নের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড থেকে সুরক্ষিত রাখবেন।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছর ১৭ লাখের মতো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন। তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশ করদাতা কোনো কর দেননি। তবে রিটার্ন দিয়েছেন।
উল্লেখ্র, বর্তমানে ১ কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন।
এসএ