গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত দল আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিল শেষে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বক্তারা। এ সময় তারা অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান এবং আওয়ামী লীগের বিষয়ে বর্তমান সরকারের ‘নীরবতার’ সমালোচনা করেন।
সমাবেশে জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ‘বহু মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্বৈরাচার হাসিনার পতন হয়েছে, কিন্তু এই হতাহতের জন্য আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের মধ্যে বিন্দু পরিমাণ অনুতাপ নেই। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলে দিতে চাই, অবিলম্বে এই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন এবং প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন।’
সাংস্কৃতিক জোটের একাংশের আহ্বায়ক মাহফুজুল ইসলাম মেঘ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু এই চব্বিশেই ফ্যাসিস্ট হয়নি, তারা ১৯৭৫ সালেও ফ্যাসিস্ট ছিল। পরপর তিনটি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে।’
এ কারণে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম লিমন বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৩ শতাংশ শিশু শহিদ হয়েছে।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘যারা শিশুদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করতে পারে, সেই গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের সহযোগী ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে।’
জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৪ সালের পর থেকে আমাদের ভোট দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। রাতের আধারে ভোট কেটে সকালে ভোটের মুলা ঝোলানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, একদল মানুষ উঠে পড়ে লেগেছে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য। আমরা বলে দিতে চাই, কোনো প্রকার টালবাহানা আমরা মেনে নেব না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’