শুক্রবার, নভেম্বর ৭, ২০২৫
শুক্রবার, নভেম্বর ৭, ২০২৫

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ। ১৯৭৫ সালের এই দিন আধিপত্যবাদী চক্রের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সিপাহিজনতা রাজপথে নেমে এসেছিল। এরপর থেকে জাতি দিবসটি পালন করে আসছে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শপথ গ্রহণ এবং সামরিক বাহিনী ও জনগণের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে।

নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি দিবসটি পালন করবে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ করা হবে। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নেতা এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। দিবসটি উপলক্ষে গণমাধ্যমে বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।


১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে পাল্টে দিতে ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটে। কয়েক দিনের জন্য বাংলাদেশ সরকারশূন্য অবস্থায় পড়ে যায়। জনগণ নিমজ্জিত হয় চরম হতাশা ও আতঙ্কে। সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান অভ্যুত্থানকারীদেও তৎপরতায় গৃহবন্দি হন। এরপর শঙ্কা ও নৈরাশ্যের দুর্যোগে ৬ নভেম্বর মধ্যরাতের পর বিপ্লবী সৈনিকদের কামানের গোলার গর্জন কুচক্রীদের সব চক্রান্ত ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেয়। সকালের উদ্ভাসিত সূর্যালোকে ঢাকার রাজপথে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য ট্রাকে সৈনিকরা আকাশের দিকে গুলিবর্ষণ করে তাদের বিজয়ের কথা জানান দিতে থাকেন। সৈনিক ও জনগণ অভূতপূর্ব আনন্দ মিছিলে যোগ দেয়। সেনা ট্যাংকে ফুলের মালা পরিয়ে জনগণ সিপাহি বিপ্লবকে অভিনন্দন জানাতে থাকে। জিয়ার কণ্ঠস্বর ‘আমি জিয়া বলছি’ শুনতে পায় জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। ৭ নভেম্বরের চেতনা জাতিঘাতী ও রাষ্ট্রঘাতী অপকৌশলের বিরুদ্ধে এক শাণিত চেতনা।

গত ৪৯ বছরের অধিকাংশ সময় দিবসটি সরকারিভাবে পালিত হয়েছে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত দিবসটি ছিল সরকারি ছুটির দিন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আবারও এই দিনে সরকারি ছুটি বহাল করা হয়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশ জুড়ে জরুরি আইন জারি এবং ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৬ সালের সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ওই বছর দিনটিতে সরকারি ছুটি বহাল ছিল। পরের বছর ২০০৮ সালে তা ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপটে ২০০৯ সাল থেকে দিনটি সরকারি ছুটি হিসেবে পালিত হচ্ছে না।


জাতীয় এই দিবস বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে ভিন্ন ভিন্ন নামে অভিহিত। বিএনপিসহ দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের কাছে একে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ বললেও বিগত বছরগুলোয় আওয়ামী লীগ ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ এবং জাসদ ‘সিপাহিজনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালন করে। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। বিএনপিসহ জামায়াতে ইসলামী, এলডিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দিবসটিকে জাতীয়ভাবে পালনের আহ্বান জানিয়ে আসছে।

কর্মসূচি: ৭ নভেম্বর সকাল ৬টায় নয়াপল্টনের বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোয় দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১০টায় দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ৭ নভেম্বর বেলা ৩টায় নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র‌্যালি বের হবে। সারা দেশে বিএনপির উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন স্ব স্ব উদ্যোগে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে। শ্রমিক দলের উদ্যোগে গত বুধবার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, ছাত্রদলের উদ্যোগে কাল শনিবার আলোচনা সভা এবং ৭ ও ৮ নভেম্বর টিএসসিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী, ওলামা দলের উদ্যোগে ৯ নভেম্বর এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, তাঁতী দলের উদ্যোগে ১০ নভেম্বর আলোচনা সভা, কৃষকদলের উদ্যোগে ১১ নভেম্বর আলোচনা সভা, জাসাসের উদ্যোগে ১৩ নভেম্বর শহীদ মিনারে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিএনপির উদ্যোগে ১২ নভেম্বর চীনমৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা হবে।


অনলাইন সংবাদপত্র

এ ছাড়া গত বুধবার থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সব ঘটনার ধারণকৃত ডকুমেন্টারি (ভিডিও, স্থিরচিত্র) ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়াসহ ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে পোস্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে দলটি।

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More