রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের কিছুক্ষণ আগে পেন্টাগনকে এ নির্দেশ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, অন্য দেশগুলো পারমাণবিক পরীক্ষা চালাচ্ছে। তাই আমি প্রতিরক্ষা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি যেন তারা সমানভাবে আমাদেরও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করে। এই প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু হবে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, তিনি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ দেখতে চান এবং এ বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে। তার ভাষায়, যদি কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়, চীনকেও তাতে যুক্ত করা হবে। যদিও রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, বাস্তবে এখনো কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালায় ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, নেভাদা ন্যাশনাল সিকিউরিটি সাইটে ‘ডিভাইডার’ কোডনামে। এরপর থেকে দেশটি আর কোনো পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক বিস্ফোরণ চালায়নি। চীন ও রাশিয়াও তেমন কোনো পরীক্ষা করেনি। তাই ট্রাম্পের “সমান ভিত্তিতে পরীক্ষা” বক্তব্যে কী ধরনের পরীক্ষা বোঝানো হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের পর কেবল উত্তর কোরিয়াই পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক বিস্ফোরণ চালিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো কম্পিউটার সিমুলেশন, ক্ষেপণাস্ত্র ও ওয়ারহেড পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের অস্ত্রাগার কার্যকর রাখছে।
ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, এমন পদক্ষেপ উপযুক্ত নয়।
অন্যদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) মেনে চলবে এবং আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।
এর আগে গত সপ্তাহে পুতিন ঘোষণা দেন যে রাশিয়া সফলভাবে পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম বুরেভেসনিক ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। একই সঙ্গে পোসেইডন নামের পারমাণবিক সুপার টর্পেডো পরীক্ষার কথাও জানায় ক্রেমলিন, যা তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্তি প্রচারণা (আইসিএএন)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়ার হাতে রয়েছে প্রায় ৫,৫০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড, আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে প্রায় ৫,০৪৪টি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
 
  দীপ্ত নিউজ ডেস্ক
দীপ্ত নিউজ ডেস্ক 
  
  
 