আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জনকে ঢাকা সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত এবং একজন অবসরোত্তর ছুটি–তে (এলপিআর) থাকা কর্মকর্তা।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা সেনানিবাস, অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা–সংক্রান্ত বিষয়ে সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় অভিযুক্ত সদস্যদের বিষয়ে সেনাবাহিনী আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে। ৩টি মামলায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।এদের মধ্যে অবসরে আছেন ৯ জন, এলপিআর ১জন, আর কর্মরত আছেন ১৫ জন।
মো. হাকিমুজ্জামান জানান, ৮ তারিখ চার্জশিট দাখিলের পর এলপিআর ও সার্ভিসে থাকা ১৬ জনকে সেনাসদরে সংযুক্ত করা হয়। তাদের ৯ অক্টোবর মধ্যে সেনাসদরে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন রেসপন্স করেছেন। তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তারা ফ্যামিলি থেকে ডিটাচ আছেন।
‘মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদের বিষয়ে‘ মেজর জেনারেল বলেন, তিনি ৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হয়েছেন। এরপর থেকে মিসিং। এয়ারপোর্টসহ সবাইকে বলা হয়েছে– উনি যেন দেশ ছাড়তে না পারেন।
তিনি আরও বলেন, গুমের শিকার হওয়া প্রতিটি পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল সেনাবাহিনী। সকল অপরাধের বিচারের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে সেনাবাহিনী।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত সেনা কর্মরতরা হলেন: মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কর্নেল কে এম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।
মেজর জেনারেল হাকিমুজ জামান বলেন, ‘মামলার অভিযোগপত্র এখনও আমরা পাইনি। এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসেনি। তবে সকল আইনের প্রতি সেনাবাহিনী শ্রদ্ধাশীল। সেনা সদস্যরা ইচ্ছে করলেই সেনাবাহিনী সিস্টেমের বাইরে কোনো কাজ করতে পারেন না। এর জন্য প্রেসক্রাইবড রুলস আছে।’
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধ অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল এই নির্দেশ দেন। আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
এসএ