চাঁদপুরের হাইমচরে পছন্দের কলেজে ভর্তির আবেদন আবেদন করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। কারণ, তাদের ভর্তির আবেদন আগেই করে রেখেছে অজ্ঞাতরা। এতে করে নিজেদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা। হতাশ তাদের অভিভাবকরাও।
শিক্ষার্থীদের অগোচরে এ ধরনের ভর্তির আবেদন জালিয়াতির প্রতিকার চেয়ে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা ও চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাস করা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ২৬ তারিখ থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হওয়ার পর থেকে তারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে গেলে দেখা যায় তাদের পছন্দ নয় এমন কলেজ চয়েস দিয়ে আবেদন করা হয়ে গেছে। এই বিষয়টি জানার পর হতবাক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলেন, এসএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছি। আশা ছিল চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হবো। কিন্তু ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে শুনি আমার আবেদন করা হয়ে গেছে। আমাদেরকে না জানিয়ে অন্য একটি কলেজে ভর্তির আবেদন করা হয়েছে– এটি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা কলেজ জীবনের শুরুতে আমাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। আমাদের জন্য যে ভর্তির আবেদন করা হয়েছে তা বাতিল করা হোক। গত ২৬ মে থেকে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছি। কোন উপায় না পেয়ে আমরা জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে এসেছি। আর যারা আমাদের কলেজের ভর্তির বিষয়টি নিয়ে এ কাজ করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
হাইমচরের কেভিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফরোজা বলেন, ভর্তির জন্য আবেদন করতে গিয়ে শুনি আবেদন আগেই হয়ে গেছে– এটি কিভাবে সম্ভব? আমরা ওই কলেজে ভর্তি হতে চাই না। আমরা আমাদের পছন্দের কলেজে পড়াশোনা করতে চাই।
অভিভাবক মোহাম্মদ ইউসুফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বহু কষ্ট করে সন্তানরা এসএসসি পাস করেছে। আমাদের স্বপ্ন সন্তনরা একটু ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়বে। কিন্তু কে বা কারা তাদের ইচ্ছেমত প্রতিষ্ঠান চয়েজ দিয়ে ভর্তি আবেদন করেছে। তারা শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে কলেজ চয়েজ দিয়ে আবেদন করেছে। ভর্তি হতে বাধ্য করছে। দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের লোকজন গত বছরও এ ধরনের কাজ করেছে। উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের ভালো ভালো শিক্ষার্থীদের তারা চয়েজ করে নিয়ে গেছে। সন্তানদের কলেজে ভর্তির আবেদনের স্বাধীনতাটুকুও কি আমাদের নেই? স্বাধীনভাবে সন্তানরা ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারছে না। আশা করি, প্রশাসন দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে যোগাযোগ করেছি। আমরা চেষ্টা করছি, যাদের ভর্তির আবেদন নিয়ে কথা হচ্ছে তাদের আবেদনগুলো ওপেন করে দেওয়ার জন্য। যেন শিক্ষার্থীরা তাদের মতো করে আবেদন করতে পারে।
আল / দীপ্ত সংবাদ