চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার দাবিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। রবিবার (৬ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিটি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রদান করেন আন্দোলনকারীরা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান এটি গ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কটি সংস্কার বা সম্প্রসারণের উদ্যোগ না থাকায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ছয় লেনে উন্নীতকরণের কার্যকর পদক্ষেপ দেখা না গেলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এই সড়কটি কক্সবাজার, বান্দরবানসহ গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন ও সীমান্ত অঞ্চলগুলোর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ত্রাণ পরিবহনসহ প্রতিদিন বিপুল যান চলাচল হয়। একটি সরু সড়কে এই চাপ সামলানো সম্ভব নয়, যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।‘
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘বিগত সরকার টানেলের মতো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে বাজেট ব্যয় করেছে, অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের উন্নয়নে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।‘
সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও লোহাগাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘এই সড়কের কালো বিটুমিন এখন রক্তে রঞ্জিত। দুর্ঘটনায় প্রতিনিয়ত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। সাম্প্রতিক দুই দুর্ঘটনায় ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অথচ কর্তৃপক্ষ দায়সারা স্পিডব্রেকার বসিয়ে দায় সারছেন।‘
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহাইব বলেন, ‘সড়কটি অনেক জায়গায় সরু, ঢালু ও আঁকাবাঁকা। পর্যটকরা পথের ঝুঁকি সম্পর্কে না জানায় অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হন। লবণ পরিবহনের ট্রাক চলাচলের ফলে রাতের বেলা সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়, যা আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে। এটি জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প হওয়া উচিত।‘
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ সোহাইব এবং সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) প্রচার–প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম।
আরও বক্তব্য রাখেন– চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান সাঈদী, সিইউজের টিভি ইউনিট প্রধান তৌহিদুল আলম, ছয় লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান, মুজিবুল হক, শফিকুল আলম, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সংগঠক ইমন মোহাম্মদ, আইনজীবী মো. শরীফ ও জিয়াউর রহমান প্রমুখ।