যে ম্যাচটিকে অনেকে ভেবেছিলেন টানটান উত্তেজনার এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, সেটি শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো জার্মানির একতরফা গোল উৎসবে। স্লোভাকিয়ার স্বপ্ন ভেঙে ছয় গোলের দাপুটে জয় তুলে নিয়ে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল হুলিয়ান নাগেলসম্যানের দল।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে লেপজিগের মাঠে অনুষ্ঠিত এই কোয়ালিফায়ার ম্যাচে জার্মানির আক্রমণাত্মক ছন্দ এবং কার্যকরী ফিনিশিংয়ের কাছে দাঁড়াতেই পারেনি স্লোভাকিয়া। প্রথমার্ধেই ৪–০ গোলে এগিয়ে যায় মানশাফটরা।
স্লোভাকিয়া ম্যাচের পরিকল্পনা সাজিয়েছিল জমাট ডিফেন্স এবং সুযোগ বুঝে পাল্টা আক্রমণের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেঙে যেতে সময় লাগে মাত্র ১৫ মিনিট। জশুয়া কিমিখের শেষ মুহূর্তের নিখুঁত ক্রস থেকে হেডে প্রথম গোলটি করেন নিক ওল্টেমাডে (১–০)।
গোল হজম করার এক মিনিটের মধ্যেই ম্যাচে ফেরার সেরা সুযোগ পায় স্লোভাকিয়া। স্ট্রেলেককে আটকাতে দুর্দান্ত সেভ করেন জার্মান গোলরক্ষক বাউমান। কর্নার থেকে দুরিসের শটটিও অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। এই দুটি মুহূর্তই ছিল স্লোভাকিয়ার পুরো ম্যাচে জার্মানির জন্য একমাত্র হুমকি।
এরপরই ম্যাচ পুরোপুরি দখলে নেয় চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। লিওন গোরেটজকার নিখুঁত থ্রু পাস থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সার্জে জিনাব্রি।
এরপর শুরু হয় ফ্লোরিয়ান ভির্টজের ছন্দময় প্রদর্শনী। পুরো ম্যাচের লিঙ্ক–আপ প্লেতে তিনিই ছিলেন আক্রমণের মূল স্থপতি। প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ট্রান্সফার এই ভির্টজ পরপর দুটি দুর্দান্ত অ্যাসিস্ট সাজান লেরয় সানে’র জন্য, যিনি বিরতিতেই স্কোরলাইন ৪–০ করে ফেলেন।
দ্বিতীয়ার্ধ কেবল আনুষ্ঠানিকতা হলেও জার্মানির ছন্দে কোনো ভাটা পড়েনি। বদলি হিসেবে নামার দুই মিনিটের মাথায় নিজ মাঠের ক্লাব আরবি লেপজিগের খেলোয়াড় রিডলে বাকু দলের পঞ্চম গোলটি যোগ করেন।
তবে রাতের সবচেয়ে আবেগঘন গল্পটা লিখলেন আরেক লেপজিগ তারকা ১৯ বছর বয়সী আসান ওয়েদ্রাওগো। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তার আন্তর্জাতিক অভিষেক, সেটিও ঘরের মাঠে। লেরয় সানে’র ব্যাকহিল পাস থেকে ঠান্ডা মাথায় শট নিয়ে ছয় নম্বর গোলটি করে পুরো স্টেডিয়ামকে উল্লাসে ভাসান তিনি।
এই জয়ের মাধ্যমে জার্মানি নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে সোমবারই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা ৩৪তম দল হিসেবে নিজেদের নাম লেখাল। এখনো বাকি রয়েছে আরও ১৪ দলের নাম।