জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ ছাড় পাবে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
তিনি জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের শনাক্তে ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা বিশ্লেষণ করছে পুলিশ।
সহিংসতার পর বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে পুরো গোপালগঞ্জ শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখনও থমথমে। শহরের রাস্তাঘাটে স্বাভাবিক যানচলাচল না থাকলেও কিছু রিকশা–ভ্যান চলাচল করছে। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
সকাল থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, নৌবাহিনী ও র্যাব–পুলিশ যৌথভাবে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল দিচ্ছে। পৌরপার্ক এলাকা, জেলা কারাগার চত্বর, সরকারি অফিসপাড়া, বাসস্ট্যান্ড ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে।
বুধবারের সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা জেলা কারাগারের বাইরের দেয়ালে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করে। এতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হলে রাতেই কারাগারে সেনা ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
কারাগার পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত কারা পরিদর্শক বলেন, “কারাগারে হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন করে হামলার কোনো আশঙ্কা নেই।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরপার্কের চারপাশে ধ্বংসস্তূপ—ইট–পাটকেল, ভাঙা তোরণ গেট, ছেঁড়া ফেস্টুন–ব্যানার ও কাটা গাছ সরানো হচ্ছে। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বারবার আশ্বস্ত করছে যে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে।
ঘটনার পরপরই গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।