৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় টানা বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এখন যেকোন সময় স্থল আক্রমণে প্রস্তুত ইসরায়েল। গাজায় ঘরে ঘরে ঢুকে হামাস যোদ্ধাদের খুঁজে বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। কিন্তু ইসরায়েলের স্থলপথে হামলার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে গাজা জুড়ে হামাসের তৈরি অসংখ্য সুড়ঙ্গ।
গাজার সুড়ঙ্গপথগুলিকে ভিয়েতনামের সুড়ঙ্গপথের সঙ্গে তুলনা করা হয় । ২০ বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়েও ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি আমেরিকা। কারণ আমেরিকার সেনা এই সুড়ঙ্গপথ পার করে ঢুকতে পারেনি। হামাসও সে রকমই গোটা গাজায় সুড়ঙ্গের জাল বিছিয়ে রেখেছে। যা ইসরায়েলি সেনার কাছে গোলকধাঁধার মতো।
কোথাও কোথাও সুড়ঙ্গপথ শুরু হয়েছে গাজার বাসিন্দাদের ঘর থেকে। সেই সুড়ঙ্গ নাকি সীমান্ত পেরিয়ে এক দিকে মিশর এবং অন্য দিকে ইসরায়েল পর্যন্ত বিস্তৃত। আর এই কারণেই ইসরায়েলি সেনা হামাসের এই সুড়ঙ্গ জালকে ‘গাজা মেট্রো‘ও বলে থাকে। শুধু অস্ত্র আনাই নয়, এই সুড়ঙ্গকে নিরাপদ আশ্রয় এবং অস্ত্র মজুতের ঠিকানা হিসাবেও ব্যবহার করে হামাস বাহিনী।
রিচম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘হামাসের বানানো সুড়ঙ্গে অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা রয়েছে। সুড়ঙ্গগুলিতে ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল‘ সেন্টার রয়েছে। বেশির ভাগ সুড়ঙ্গ ১ মিটার চওড়া এবং আড়াই মিটার উঁচু।‘
প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে অস্ত্র বানানোর কাজও করছে হামাস। হামাস সাধারণত ইরানের তৈরি ফতেহ–১১০ রকেট ব্যবহার করে। ৫০০ কেজির ওজন এই রকেট ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত হামলা চালাতে সক্ষম। এ ছাড়াও আল কুদস নামে এক ধরনের রকেটও ব্যবহার করে হামাস। সেটি নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি। এই দুই রকেট ছাড়াও হামাসের হাতে রয়েছে এম–৩০২ রকেট। যেটি সিরিয়ার তৈরি।
হামাসের কাছে রয়েছে কংকার্স ট্যাঙ্ক এবং সেমি–অটোমেটিক কমান্ড টু লাইন অফ সাইট ওয়ার গাইডেড ট্যাঙ্ক । ঘণ্টায় ২৯০ কিলোমিটার বেগে ছোটে এই ক্ষেপণাস্ত্র। যেতে পারে ৭০–২৫০০ মিটার পর্যন্ত।
এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, হামাসের কাছে অন্তত ১০ হাজার যোদ্ধা রয়েছেন। গেরিলা যুদ্ধে দক্ষ এই যোদ্ধারা।
৭ অক্টোবর ২০ মিনিটের মধ্যে যে ৫০০০ হাজার রকেট হামলা চালানো হয়. সেই হামলার জন্য দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে হামাস যা ইসরায়েল ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ইসরায়েল বাহিনীতে গুপ্তচর রয়েছে হামাসের।
আল/ দীপ্ত সংবাদ