গাইবান্ধার গ্রামঞ্চলের ডাকঘরগুলোর নিজস্ব ভবন না থাকায় কার্যক্রম চলছে খোলা মাঠ, চায়ের দোকান, স্কুলের বারান্দাসহ বিভিন্ন দোকান ও ভাড়া ঘরে। ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও স্ক্যানিং মেশিন সব থাকলেও ভবন অভাবে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
জেলার সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর, গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় ১২৬টি ডাকঘর রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান ডাকঘর ১টি, উপজেলা ডাকঘর ৬টি, সাব–ডাকঘর ৫টি এবং শাখা ডাকঘর রয়েছে ১১৪টি। এসব শাখা ডাকঘরের মধ্যে নিজস্ব ভবন রয়েছে মাত্র ১৬টির। এলাকার মানুষজন চিঠি পোস্টসহ আনুষাঙ্গিক কাজ এখানে সারেন। এসব শাখা ডাকঘরে কর্মরত রয়েছে তিন শতাধিক পোস্ট মাস্টার, পোস্ট ম্যান ও রানার। শুধু তাই নয় এসব ডাকঘরে চিঠিপত্র পৌঁছানোর জন্য কোন যানবাহনও নেই। প্রধান ডাকঘর থেকে ২১ জন রানারের মাধ্যমে ওইসব শাখা ডাকঘরে চিঠি পৌঁছানো হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ল্যাংগাবাজার শাখা ডাকঘরের কার্যক্রম চলছে কসমেটিকস–স্টেশনারীর দোকানে। বালাআটা শাখা ডাকঘরের কার্যক্রম চলে একটি বাড়ীর আঙ্গিনায়। নিজের হোমিও ওষুধের দোকানে ডাক টিকিট বিক্রি করেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার দারিয়াপুর শাখা ডাকঘরের পোষ্ট মাস্টার মকবুল হোসেন। সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়ন ডাকঘরও চলছে অন্যের ছোট চালা ঘরের নিচে।
উপজেলার ঘেগারবাজার শাখা ডাকঘরের রানার নারায়ণ চন্দ্র সরকার বলেন, অন্যের চাকরির চিঠি বিলিবন্টন করলেও নিজের চাকরি জাতীয়করণের চিঠি কবে পাব, সেটা জানি না। চাকরি জাতীয়করণের আশা ছেড়ে দিয়ে এখন নামমাত্র ভাতায় মানুষকে ডাকসেবা দিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ বিভাগীয় ডাক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদ গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুকুমার চন্দ্র মোদক বলেন, যেখান থেকে রাজস্ব আয় হয়, সেখানে কোন কার্যালয় নেই। এছাড়া ডাক ব্যবস্থার উন্নয়নসহ শাখা পোস্টমাস্টার ও গ্রামীণ ডাক রানারদের চাকরি জাতীয়করণ, ডাক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও রেশন ব্যবস্থা চালু করাসহ শাখা ডাকঘরের নিজস্ব ভবন করার দাবি জানান এই নেতা।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মোঃ অলিউর রহমান বলেন, সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। আমরা সরকারে পক্ষ থেকে তাদেরকে যে কোন ধরণের যাতে উন্নত অবকাঠামোর মধ্যেই এ ধরণের সার্ভিসগুলো দিতে পারে সেই লক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এফএম/দীপ্ত সংবাদ