রবিবার, অক্টোবর ২৬, ২০২৫
রবিবার, অক্টোবর ২৬, ২০২৫

ক্ষমতায় গেলে শিক্ষায় বিএনপি সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেবে: তারেক রহমান

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিএনপি সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেবে। পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজিয়ে তুলতে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সময়ে নিজেকে দক্ষ করে গোড়ে তোলার বিকল্প নেই।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপি ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা মেধাবৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ঘোষিত ৩১ দফার অংশ হিসেবে দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে বিএনপি বিশেষজ্ঞ টিম তৈরি করেছে, যারা এরই মধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে। এছাড়াও বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষকদের পেশার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে। সব স্কুলে বাংলা ইংরেজির পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।’

শিক্ষাব্যবস্থা উন্নতিকরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তারেক বলেন, ‘রাষ্ট্রের সুরক্ষায় প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা। ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিএনপি সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেবে।

পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে সাজিয়ে তুলতে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সময়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

জ্ঞান, বুদ্ধি, মেধা এবং যোগ্যতার প্রতিযোগিতা চলছে সর্বত্র উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বিশ্ব এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) যুগে প্রবেশ করেছে।

মেধাবীদের জন্য এখন বিশ্বের দরজা উন্মুক্ত। তাই শিক্ষার্থীদের এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া জরুরি।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘তোমরা মাদরাসা বা স্কুল যেখানেই পড়াশোনা করো না কেন, মনে রাখতে হবে সম্মানের সাথে টিকে থাকতে হলে আধুনিক ও ব্যবহারিক শিক্ষায় দক্ষ হতে হবে। জ্ঞানেবিজ্ঞানে পারদর্শী হতে হবে, কারিগরি শিক্ষায়ও হতে হবে পারদর্শী।’

তিনি আরও বলেন, বিএনপি আগামী দিনের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাজিয়ে তুলতে কাজ করছে। বর্তমান বিশ্বে নিজেকে অন্যের চেয়ে দক্ষ করে তোলার যে প্রতিযোগিতা চলছে, সেখানে একনিষ্ঠতা ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তির বিকল্প নেই।

তারেক রহমান শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘মেধা বিকাশের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন, সঠিক পরিচর্যা ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি। মেধা সহজাত হলেও এর বিকাশের জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। তাই নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিও মনোযোগী হতে হবে। কারণ তারাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেশে ফিরে সকলের সাথে সামনাসামনি বসে আবার কথা বলতে পারব। কীভাবে আমরা দেশকে পুনর্গঠন করতে পারব, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব এবং তোমাদের ভবিষ্যতকে মজবুত করতে পারব সে বিষয়ে আলোচনা করব।’

অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তারেক রহমানকে সরাসরি বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তারেক রহমান এসব প্রশ্নের জবাব দেন।

পাকুন্দিয়ার আসিয়া বারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা প্রশ্ন করেন, দেশের গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে। এ বিষয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং প্রতিশ্রুতিগুলো কী কথার কথা থাকবে কি না?

উত্তরে তারেক রহমান বলেন, ‘অতীতে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন বেগম খালেদা জিয়া ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। পরবর্তীতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু করেন। বিষয়টা তোমাদের মা বাবারা জানেন। আমরা তোমাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করব, না হয় তোমরা বড় হয়ে আমাদের ভোট দিওনা।’

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন। জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, বিএনপির প্রেস উইংয়ের সদস্য সায়রুল কবীর খান, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, পাকুন্দিয়া উপজেলার ৮৪টি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০ হাজার ২১১জন শিক্ষার্থী চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এই মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ ১০ জনসহ মোট ৪০ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও অংশগ্রহণকারী সবার জন্য সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খন্দকার আল আশরাফ মামুন।

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More