গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার রেশ পড়েছে ক্রিকেট মাঠেও। সবুজ গালিচায় যেকোনো টুর্নামেন্ট আর নাও দেখা যেতে পারে ভারত–পাকিস্তানের লড়াই।
কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে পর্যটক হত্যকাণ্ডের ঘটনায় ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক সবচেয়ে তলানীতে এসে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ একে যুদ্ধাবস্থা বলেও অভিহিত করছেন। বাণিজ্য, সড়ক–বিমান যোগাযোগ বন্ধ, নদীর পানিচুক্তি বাতিল হওয়ার পর এবার ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে।
ক্রিকেট মাঠেও এর প্রভাব পড়েছে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে কখনোই খেলা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই। পাকিস্তানের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট–পিএসএল, ভারতে সম্প্রচার করার অ্যাপস–ফানকোডে‘র সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এবার ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড, সাফ জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো ধরনের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে না তারা। গুঞ্জন রয়েছে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত আইসিসি ও এসিসি‘র ইভেন্টেও খেলতে চায় না। বিষয়টি পরিষ্কার করে বিসিসিআই চিঠি দিয়েছে আইসিসি ও এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিলকে।
চলতি বছরে আইসিসি ও এসিসি‘র দুটি ইভেন্ট আছে–সেপ্টেম্বরে টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপ ও সেপ্টেম্বর–অক্টোবরের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ। দুটি টুর্নামেন্টেরই আয়োজক বিসিসিআই। এর মধ্যে ছেলেদের এশিয়া কাপ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হবে। নারী বিশ্বকাপে ভারত–পাকিস্তানের ম্যাচটি, নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত আগেই চূড়ান্ত করা আছে।
দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মতো বড় ইভেন্টেও ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ না খেলার সিদ্ধান্ত নিলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে আইসিসি ও এসিসি। কারণ চার বছরের জন্য এসিসি এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করেছে ১৭০ মিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার কোটি টাকায়।
ভারতীয় মিডিয়া জানিয়েছে, এ বিষয়টা নিয়ে বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হবে আইসিসি এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে। যাতে কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ভারত এবং পাকিস্তানকে একই গ্রুপে যাতে রাখা না হয়, সেই বিষয়ে আবেদন করা হবে।
এর আগে, ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা বন্ধ রেখেছিলো ভারত। যদিও ২০১১ বিশ্বকাপের পর এই সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি ঘটে। ২০১৩ সালে ভারত সফর করেছিলো পাকিস্তান। তবে ওই একবারই। এরপর শীতল রাজনৈতিক সম্পর্কের বরফ যত কঠিন হয়েছে, তত ভারত–পাকিস্তানের ক্রিকেট খেলা বন্ধ।
মোহাম্মদ হাসিব/এজে/দীপ্ত সংবাদ