শুক্রবার, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫
শুক্রবার, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫

কন্যাসন্তানের বাবা হলেন আন্দোলনে নিহত ছাত্রদল নেতা রাব্বী

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

রুমি খাতুনের কোল জুড়ে এখন ফুটফুটে কন্যাসন্তান এসেছে। শীতের রাতে কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশের মাঝেই সন্তানের মুখ দেখে আনন্দে অশ্রুবরণ করলো মা। সেই আনন্দ এখন বেদনারও সংমিশ্রন। বিষন্নতার সঙ্গে অশ্রুসিক্ত পরিবার।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সারাদিন এমন পরিবেশ তৈরি হয় মাগুরা জেলা শহরের ল্যাব সিটি মেডিকেল সার্ভিসেস ক্লিনিকে। কন্যাসন্তানটির বাবা ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি।

মেহেদী হাসান রাব্বি নেই; কিন্তু তার সন্তান জন্মের পর থেকেই ক্লিনিক জুড়ে কাঁদছে। সেই শব্দ পরিবার থেকে শুরু করে উপস্থিত সকলের বুকে যেন বেঁধে যাচ্ছে। এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে বুধবার গভীর রাত পর্যন্তু।


নিহত রাব্বির স্বজন শফিকুল ইসলাম জানান, মা ও মেয়ে দুজনই ভাল আছে। শারীরিক কোন জটিলতা নেই। রাব্বির ভাইয়ের মা একটু শারীরিকভাবে অসুস্থ। এছাড়া রাব্বির ভাইয়ের স্ত্রী ভাল আছেন।


মৃত্যুর সময় তার স্ত্রী রুমি খাতুন ছয় মাসের অন্ত:সত্ত্বা ছিলেন। স্বামী হারানোয় তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। সেই শোক নিয়ে অনাগত সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘ চার মাস পর কন্যা সন্তানের মুখ দেখে মায়ের মুখে বেদনার পাশাপাশি আনন্দের রেশ দেখা গেছে।

মেহেদী হাসান রাব্বি মাগুরা পারনান্দুয়ালী সংলগ্ন বরুনাতৈল এলাকার মৃত মঈন উদ্দিনের ছেলে। মাগুরা জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি। গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে তিনি মাগুরা পারনান্দুয়ালী উপশহরের ব্রিজ এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে নিহত হন।

নিহত রাব্বির স্ত্রী কানিফ ফাতেমা রুমি বলেন, আমি দেশবাসীর কাছে আমার স্বামীর জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করে। সবাই আমার বাচ্চার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন আমার স্বামীর আদর্শে আমার বাচ্চাকে মানুষ করতে পারি।

স্বামীর বিচার না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কার কাছে বিচার চাইব; যেখানে পুলিশ বা প্রটেকশন দিয়ে আওয়ামী লীগ দিয়ে আবার স্বামীকে হত্যা করিয়াছে। অথচ এখন পর্যন্ত পুলিশ একজন খুনিকে গ্রেফতার করতে পারল না। এর আর কি বিচার হবে বিচার হলে চার মাসে বিচার হতো। সরকার যদি এর বিচার না করতে পারে তাহলে আমার কাছে তারা স্বীকার করুক যে তারা ব্যর্থ। তারপর আমি আল্লাহ পাকের কাছে ছেড়ে দিব আল্লাহ পাক যেন এর বিচার করে।

নিহত রাব্বির মা সালেহা বেগম বলেন, সন্তান গর্ভে আসার পর আমার ছেলের খুব শখ ছিল তার ছেলেকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবে কিছু কিনে দেবে। আজ সন্তান দুনিয়াতে এসেছে কিন্তু আমার ছেলে এ দুনিয়া থেকে চলে গেল।


এ ঘটনায় গত ১৩ আগস্ট মাগুরা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই ইউনিস আলী। ওই মামলায় মাগুরার আওয়ামী লীগের দুই সাবেক সংসদসহ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতারা আসামি করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে প্রায় ১৫০ জনকে। তবে দীর্ঘ চার মাস কেটে গেলও কোন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখাতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে সন্তান জন্মদানের খবর শুনে বুধবার দুপুরে ক্লিনিকটিতে তাকে দেখতে ছুটে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান।

কাশেমুর রহমান শ্রাবণ/এজে‌/ দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More