ফ্রিজ, রেফ্রিজারেটর, মোটরসাইকেল, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ও কমপ্রেশার উৎপাদনকারীদের ওপর করপোরেট আয়করের হার দ্বিগুণ করা হয়েছে। ২০২৫–২০২৬ অর্থবছর থেকে এসব পণ্য উৎপাদনকারীদের ওপর ২০ শতাংশ পর্যন্ত আয়কর বসাতে পারবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
জাতীয় রাজস্ব কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও মোটরসাইকেল উৎপাদনকারীদের ২০৩২ সাল পর্যন্ত এই সংশোধিত আয়কর দিতে হবে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৫–২৬ করবর্ষ থেকে নতুন হারে আয়কর ধার্য হবে; অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে এ ধরনের শিল্পের যে আয় হবে, তার ওপর এই বাড়তি কর দিতে হবে।
দেশীয় ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নির্ভরতা কমিয়ে আনার পাশাপাশি রাজস্ব সংগ্রহ ও সক্ষমতা বাড়াতে জোর দিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ইলেকট্রনিক পণ্য ও মোটরসাইকেল উৎপাদনকারীদের ওপর কর বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত এসেছে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দেয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এই ঋণ দিতে বেশ কিছু শর্তারোপ করা হয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশের কর ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিল আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাড়তি ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে বলেছিল আইএমএফ। ভর্তুকি কমিয়ে আনতে একটি সমন্বিত কৌশল বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছিল তারা। বিদ্যুৎ ও সার খাতের বকেয়ারও সুরাহা করতে বলা হয়েছিল আইএমএফের শর্তে।
বৈশ্বিক সর্বনিম্ন কর–জিডিপির অনুপাত বাংলাদেশে। ব্যাপক কর সুবিধার কারণে সরকারকে আর্থিক ঘাটতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে এক লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা কর সুবিধা দিয়েছে সরকার।
২০০৯ সালের জুলাই থেকে ফ্রিজ, রেফ্রিজারেটর ও মোটরসাইকেল উৎপাদনকারীদের কর সুবিধা দেওয়া শুরু করে এনবিআর। প্রথমে ১২ বছরের জন্য পাঁচ শতাংশ হারে করপোরেট আয়কর নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠানটি।
পরবর্তীতে এই কর সুবিধা আরও বাড়ানো হয়। কিন্তু ২০২০–২১ অর্থবছরে এসব পণ্যের ওপর আয়কর বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে স্থানীয় উৎপাদিত পণ্যকে এগিয়ে নিতে সরকার এই প্রণোদনা দিয়ে আসছে সরকার।