এপ্রিল মাসে সারা দেশে ৬৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭০৮ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ সময় দুই হাজার ৪২৬ জন আহত হয়েছে।
এছাড়া ৪৪টি রেলপথে দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ছয়টি দুর্ঘটনায় আটজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন এবং একজন এখনও নিখোঁজ।
বুধবার (২২ মে) যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ৭৩৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬৩ জন নিহত ও দুই হাজার ৪৭২ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৩০৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৭৪ জন নিহত ও ৩২৮ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৪৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ ও মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং আহতের ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১৫৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত ও ৩০৫ জন আহত। বরিশাল বিভাগে সর্বনিম্ন ৩৫ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য, ১৬৯ জন চালক, ৬৩ জন পথচারী, ৫৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ছয়জন শিক্ষক, ১১৯ জন নারী, ৬৭ জন শিশু, তিনজন সাংবাদিক, দুইজন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, তিনজন প্রকৌশলী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আটজন নেতা–কর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন– একজন পুলিশ সদস্য, তিনজন সেনাবাহিনী সদস্য, একজন সাংবাদিক, দুইজন চিকিৎসক, ১২৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৫৮ জন পথচারী, ৯৩ জন নারী, ৪৯ জন শিশু, ৩৬ জন শিক্ষার্থী, ৩৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ছয়জন শিক্ষক, তিনজন প্রকৌশলী ও আটজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৯৮৮টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে।
দুর্ঘটনায় জড়িত যানবাহনের মধ্যে ছিল ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ নছিমন–করিমন–মাহিন্দ্রা–ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ প্রাইভেটকার–এসইউভি–মাইক্রোবাস।
এছাড়া সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং ২৩ দশমিক ১৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ বিবিধ কারণে যেমন– চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ০ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ ট্রেনের সঙ্গে অন্য কোনো যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৪২ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে।
এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত ঘটেছে।
সুপ্তি/ দীপ্ত সংবাদ