কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) একটি কম্পিউটার সফটওয়্যার, যা তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে যন্ত্র বা অ্যাপ্লিকেশনকে মানুষের বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তির আদলে কাজের উপযোগী করে তোলে। অন্যভাবে বলতে গেলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানুষের বুদ্ধিমত্তার আদলে প্রোগ্রামকে বোঝায়; যা মানুষের মতো চিন্তা করে এবং তাদের কার্যাবলী অনুকরণ করে। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫০ সালে প্রথম এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। দশ বছর পর ১৯৬০ সালে সফল বাস্তবায়ন শুরু হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) বিরতির কোন প্রয়োজন নেই। অপরদিকে মানুষ বেশি কাজ করলে ক্লান্ত হয়ে যায় এবং বিরতির প্রয়োজন হয়। এ কারণে একসঙ্গে হাজার হাজার কাজ দ্রুত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা করতে পারে। পাশাপাশি খুব অল্প সময়ে নতুন অনেক বিষয় শিখতে পারে।
যেমন বলা যায় টেসলার নতুন স্ব–চালিত গাড়ি এবং আইবিএম এর ডিপ ব্লু সিস্টেমসহ ইত্যাদি। এছাড়াও স্মার্টফোনে থাকা স্পিচ রিকগনিশন বা ফেস রিকগনিশনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদাহরণ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক হচ্ছে অ্যালান টুরিং।
সময়ের বিবর্তনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) অনুষঙ্গ হিসেবে মেশিন লার্নিং বা (এমএল) এর ব্যবহার শুরু হয়।
মেশিন লার্নিং হলো কম্পিউটারের এমন কিছু প্রোগ্রাম যা অটোমেটিকভাবে মানুষের সাহায্য ছাড়াই ডাটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, শিক্ষাগ্রহণ করে ফলাফল প্রদান করতে পারে।
এছাড়া আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির খুব সহজ উদাহরণ হলো কম্পিউটারের দাবা খেলা। মানুষের দেওয়া দাবার চাল কম্পিউটার সয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণ করে তার বিপরীতে চাল দেয়। মানুষের কোন রকম সাহায্য ছাড়াই কম্পিউটার তথ্য বিশ্লেষণ করে তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাবা খেলে যেতে পারে। মানুষের মত কম্পিউটারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাই হল আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর্টিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের আরও কিছু উদাহরণ দেয়া যেতে পারে– যেমন ব্যাংকের জালিয়াতি শনাক্তকারী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
যেভাবে এআই কাজ করে
১. ন্যাচারাল ল্যাংগুয়েজ প্রসেসের (এনএলপি) মাধ্যমে কম্পিউটার মানুষের ভাষা শনাক্ত করতে পারে। ভাষা শনাক্ত করে তার বিশ্লেষণ করে উত্তর প্রদান বা মৌখিক কমান্ডকে বিশ্লেষণ করে সেভাবে কাজ করে।
২. কম্পিউটার ভিশন সিস্টেম যেকোনো জিনিসের ছবি এবং ভিডিও শনাক্ত করতে পারে। ফলে মানুষের ম্যানুয়ালি যে কাজ করতে দিনের পর দিন দরকার হতো; কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা তা মুহূর্তের মধ্যে করে দিচ্ছে।
৩. ‘ইন্টারনেট অফ থিংস‘ হল এমন একটি আন্ত:সম্পর্কযুক্ত ডিভাইসের নেটওয়ার্ক যাতে ডিভাইসগুলো একে অন্যের সঙ্গে মানুষের সাহায্য ছাড়াই তথ্য আদান প্রদান করতে পারে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফলে ব্যবহারকারী খুব সহজেই তার নিত্য ব্যবহার্য পণ্যগুলোকে তাদের প্রয়োজনমতো ব্যবহারের নির্দেশনা দিতে পারেন।
এআই প্রযুক্তির ব্যবহারে মানুষে জীবনকে সহজের পাশাপাশি সময়কে বাঁচিয়েছে।