উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে সরকারের সতর্ক ভূমিকা পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যাদের উপদেষ্টা পরিষদে নেয়া হবে, তারা যেন কোনোভাবেই বিতর্কিত না হন, সরকারের উচিত তা নিশ্চিত করা। সরকারের স্বার্থেই এই বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ, আমরা চাই না এই সরকার ব্যর্থ হোক এবং আমাদের সংগ্রাম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হোক।‘
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের মন্তব্য করা ঠিক নয়। এটি জনগণের সিদ্ধান্ত, রাজনৈতিক দলের নয়। জনগণ ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ করবে কারা রাজনীতি করবে আর কারা করবে না। খারাপ রায় পেলে দলগুলো জনগণের মাধ্যমে বাতিল হবে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ জাতিকে বিভক্ত করতে সফল হয়েছে। আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই; যেখানে মতভেদ থাকবে, কিন্তু মৌলিক বিষয়ে ঐক্য অটুট থাকবে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকারের বিষয়ে জাতিকে এক থাকতে হবে।‘
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চলমান আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে আমরা বাম, ডান, মধ্যপন্থীসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলেছি। গণঅভ্যুত্থানের প্রক্রিয়া অনেকটাই সফল হয়েছে এবং চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।‘
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন জাতি হিসেবে আমাদের সহনশীল হওয়া প্রয়োজন। ১৭ বছরের বিভক্তির অবসান সহজ নয়, এতে সময় লাগবে। এই সরকারকে দায়িত্ব দেয়া উচিত নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, যাতে সব দল সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করার পাশাপাশি আগের ভোট ব্যবস্থার ত্রুটি দূর করা জরুরি।‘
মতবিনিময়ের সময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও–৩ আসনের সাবেক এমপি জাহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরীফসহ বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এর আগে, গত ৪ আগস্ট সহিংসতায় পুড়ে যাওয়া ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির কার্যালয়ের পুনর্নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মির্জা ফখরুল।