নীলফামারী জেলার উত্তরা ইপিজেডে কারখানা বন্ধ ও ছাঁটাইয়ের জেরে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী‘র সংঘর্ষে হাবিবুর রহমান (২০) নামে এক শ্রমিক নিহত এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
নিহত শ্রমিক হাবিবুর রহমান (২০) ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি নিটিং কারখানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়ের কাজীরহাট গ্রামে; বাবার নাম দুলাল উদ্দিন।
নিহত হাবিবুরের বড় ভাই আশিকুর রহমান বলেন, ‘কারখানায় হাবিবুর নাইট ডিউটি ছিল। কাজ শেষে আজ সকালে ইপিজেড থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।’
নিহত শ্রমিকের বাবা দুলাল হোসেন বলেন, আমার ছেলে রাতের বেলা ডিউটিতে গেছে। সে সকালবেলা বাড়ির ফেরার পথে গুলিতে নিহত হয়েছে। আমার ছেলে তো আন্দোলনে ছিলো না। সে অন্য কোম্পানিতে কাজ করে। তারপরেও কেনো আমার ছেলেকে হত্যা করা হলো। আমি এর বিচার চাই।
ইপিজেড শ্রমিকরা জানান, ইপিজেডে এভারগ্রিন নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সম্প্রতি ৫১ জন শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়। এ নিয়ে সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এ অবস্থায় শ্রমিকদের বেতন–ভাতা না দিয়ে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এভারগ্রিন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়ে ইপিজেড প্রধান ফটকে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়।
আজ সকাল ৮টায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে এভারগ্রিন কারখানা শ্রমিকেরা ওই নোটিশ দেখতে পান। ভেতরে ঢুকতে না পেরে তাঁরা ইপিজেডের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। এ অবস্থায় নীলফামারী–সৈয়দপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শ্রমিকরা আরও জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং তাঁদের সরিয়ে দিতে যান। তখন উত্তেজিত শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। শ্রমিক হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন আরও ১০ জন। হতাহত শ্রমিকদের নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফারহান তানভিরুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৮টায় হাবিবুর রহমানকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে।
এসএ