‘ঈদুল আজহা‘ মুসলিমদের জীবনে একটি অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। ঈদুল আজহা কে চলিত ভাষায় আমরা কোরবানি ঈদও বলে থাকি। মানবতা ও আত্মত্যাগের বার্তা নিয়ে প্রতিবছর মুসলিমদের জীবনে হাজির হয় এই উৎসব।
ঈদুল আজহা জ্বিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক পঞ্জিকায় প্রতি বছর তারিখ ভিন্ন হয়, সাধারণত এক বছর থেকে আরেক বছর ১০ বা ১১ দিন করে কমতে থাকে। তাই ঈদের তারিখ স্থানীয়ভাবে জ্বিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।
কোরবানির ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন। কোরবানির ঈদ–পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)এর অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করে। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর পশু কোরবানি করে থাকে।
কোরবানির মূল উদ্দেশ্য কী শুধুই পশু জবাই করা? না কোরবানির মূল উদ্দেশ্য শুধুই পশু জবাই করা নয়, মানুষের মধ্যে যদি পশু সুলভ কোন আচরণ থাকে তা জবাই করা। হাদিসে আছে, পশু জবাই খোদা তা’লার নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম তবে তা ঐ ব্যক্তিকে নিষ্ঠার সাথে আল্লাহতায়ালার প্রতি ভালোবাসা রেখে পশু জবাই দিতে হবে।
বাংলাদেশের মুসলিমরা সাধারনত গরু এবং ছাগল কোরবানি দিয়ে থাকে। তবে কিছু সংখ্যক লোকেরা ভেড়া, মহিষ, উট এবং দুম্বা কোরবানি করে থাকেন। কুরবানির ছাগলের বয়স কমপক্ষে ১ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ বছর হতে হবে। নিজ হাতে কুরবানি করা ভাল। কুরবানি প্রাণী দক্ষিণ দিকে রেখে কিবলামুখী করে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার‘ বলে জবাই করতে হয়।
কোরবানির ঈদ আমাদেরকে কি শিক্ষা দিয়ে থাকে:
কোরবানি শব্দের অর্থ নৈকট্য, ত্যাগ, উৎসর্গ। আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যেই মুসলিমরা পশু কোরবানি করে থাকে। কোন ব্যক্তির মধ্যে ঈর্ষা, ঝগড়া–বিবাধ ঈত্যাদি দিকগুলোকে পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে থাকে। আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা আল্লাহর নামে কোরবানি করে তাদের জন্য সীমাহীন সওয়াবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)।
মহানবী (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিনে কোরবানি করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত। কোরবানির জন্তুর শরীরের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে কোরবানিদাতাকে একটি করে সওয়াব দান করা হবে। কোরবানির পশুর রক্ত জবাই করার সময় মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় (মেশকাত)।
কোরবানির বিনিময়ে সওয়াব পেতে হলে অবশ্যই কোরবানিটা হতে হবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে।
এসএল/দীপ্ত নিউজ