আগামী ৩১ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই ঘোষণাপত্রে মুজিববাদী সংবিধানকে ‘কবরস্থ’ করার দাবি জানিয়ে ‘নাৎসিবাদী আওয়ামী লীগকে’ বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করার প্রত্যাশা করেছেন।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঘোষণাপত্র প্রকাশের প্রস্তুতি বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মুজিববাদী সংবিধান আমাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করেছে। এক দফার যে ঘোষণা শহীদ মিনারে হয়েছিল, সেই স্থান থেকেই সংবিধানের অবসানের বার্তা দেয়া হবে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র মূলত ৫ আগস্টেই প্রকাশ করা উচিত ছিল। এর বিলম্বে ফ্যাসিবাদের পক্ষে থাকা বিভিন্ন শক্তি ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ২০ হাজারের বেশি আহত এবং দুই হাজারের বেশি শহীদের আত্মত্যাগের ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে থাকা এই বিপ্লবের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি হয়েছে।‘
সংগঠনের সাবেক সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা বিপ্লবের একটি ধাপ অতিক্রম করেছি, তবে ঘোষণাপত্রের প্রকাশ আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল।‘
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘোষণাপত্র ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির আশা–আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করবে এবং সকলের ঐক্য নিশ্চিত করবে।‘
তিনি আরও জানান, ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে, যা বিভিন্ন অংশগ্রহণকারীর মতামত নিয়ে সংশোধন ও পরিমার্জন করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আবদুল্লাহ দাবি করেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান ভারতের প্রভাবকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটি কীভাবে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা বিনষ্ট করেছে এবং এর বিকল্প কী হতে পারে, তা ঘোষণাপত্রে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।‘
সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু সেটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা করা সরকারের দায়িত্ব।‘
সারজিস আলম স্পষ্ট করে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা জাতীয় নাগরিক কমিটি কোনো রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হবে না। এটি থাকবে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের প্রতীক হিসেবে। ভবিষ্যতে নতুন কোনো রাজনৈতিক দল গঠিত হলেও তা ভিন্ন নামে হবে।‘
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের নেতারা। জুলাই বিপ্লবের এই ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে তাদের উদ্যোগ নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা তৈরির পথ দেখাবে বলে আশা করছেন তারা।
এম/আল