ফিফা র্যাঙ্কিং বিবেচনায় ১৫৫ তে থাকা পুয়ের্তো রিকোর সাথে তিনে থাকা আর্জেন্টিনার ম্যাচটি যে একতরফা হবে সেটি প্রত্যাশিতই ছিল। হয়েছেও তাই। ফিফা প্রীতি ম্যাচে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সাথে পাত্তাই পায়নি উত্তর আমেরিকার দেশটি। হজম করতে হয়েছে হাফ ডজন গোল।
প্রথমবারের মতো পুয়ের্তো রিকোর মুখোমুখি হয়ে লিওনেল স্কালোনির দল গোল উৎসব মাতে। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন ম্যাক অ্যালিস্টার ও বদলি নামা লাউতারো মার্টিনেজ। বাকি দুটি গোলের একটি এসেছে গঞ্জালে মন্টিয়েল ও আত্মঘাতির সৌজন্যে। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে আগের ম্যাচে দর্শক হয়ে থাকা লিওনেল মেসি গোল না পেলেও দুটি এসিস্ট করেছেন।
মায়ামির চেইজ স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে অভিষেক হয় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসের ফরোয়ার্ড হোসে লোপেজের। ম্যাচে একটি অ্যাসিস্ট করেন ২৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। ম্যাচজুড়ে আর্জেন্টিনার দাপটের কাছে অসহায়ই ছিল প্রতিপক্ষ। ৬৯ শতাংশ বল দখলে রেখে ২৫টি শট নিয়ে ১১টি লক্ষ্যে রাখে আর্জেন্টিনা। আর ৫টি শট নেওয়া পুয়ের্তোর গোলমুখে রাখতে পেরেছে তিনটি শট।
ম্যাচরে দুই অর্ধে তিনটি করে গোল করা আর্জেন্টিনা ১৪ মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টার হেড থেকে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। মেসির নেয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে বল পেয়ে যান গঞ্জালেজ। আতলেতিকো মাদ্রিদের লেফট ব্যাকের নেয়া শট আবার পেয়ে যান অ্যালিস্টার। পাঁচ গজ দূরে থেকে প্রতিপক্ষের গোলকিপারকে পরাস্ত করে দারুণ হেডে বল জালে পাঠিয়ে দেন এই মিডফিল্ডার ।
১০ মিনিটেরও কম সময় পর দুর্দান্ত এক ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মন্টিয়েল। গোলের যোগানদাতা মেসি। বিরতির আগেই লিভারপুলের তারকা মিডফিল্ডার ম্যাক অ্যালিস্টার নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করে ব্যবধান ৩–০ করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই বেশ কিছু পরিবর্তন আনে। তবে ম্যাচের চিত্র অপরিবর্তিতই থাকে। প্রথমার্ধের মতোই তিনটি গোল পায় আর্জেন্টিনা। যার একটি প্রতিপক্ষের ভুলে। আর বাকি দু’টি বদলি নামা মার্টিনেজের নৈপুণ্যে। মাঠে নেমে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই জোড়া গোল করেন ইন্টার মিলানের তারকা ফরোয়ার্ড।
৬৪ মিনিটে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন পুয়ের্তোর লেফট–ব্যাক স্টিভেন এচেভেরিয়া। মোলিনার ক্রস ডি–বক্সের দূর প্রান্তে গিয়ে পৌঁছায় ফাঁকা জায়গায় থাকা গঞ্জালেজের আতলেতিকোর এই ফুলব্যাক সময় নিয়ে নিচু শট নেন ছয় গজ বক্সের সামনে থাকা ডিফেন্ডারদের ভিড়ের দিকে। বলটি ক্লিয়ার করতে গিয়ে পুয়ের্তো রিকোর ডিফেন্ডার শরীর ঘুরিয়ে পায়ের পাশে বল ছোঁয়াতে চান। কিন্তু ভুলভাবে লেগে সেটি উল্টো দিকেই উঠে যায়। পুয়ের্তোর গোলকিপার কাটলারের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে বল জালে জড়ায়। ব্যবধান হয়ে যায় ৪–০।
৬৪ মিনিটে হোস লোপেজকে তুলে মার্টিনেজকে নামা স্কালোনি। গঞ্জলেজের অ্যাসিস্ট থেকে ৭৯ মিনিটে মাত্র ছয় গজ দূর থেকে দারুণ কায়দায় চিপ করে গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়ান মার্টিনেজ। পাঁচ মিনিট পরই হাফ–ডজন পূর্ণ করা গোলটি করেন মার্টিনেজ। গঞ্জালেজের বাড়ানো বলে দ্রুত আক্রমণে ওঠেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। মায়ামি তারকা পুয়ের্তোর দু’জন ডিফেন্ডারকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে মুহূর্তে বল বাড়িয়ে দেন মার্টনেজের কাছে। এরপর নিখুঁতভাবে নিচের কোনায় বল পাঠিয়ে দেন মার্টিনেজ।