ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওসমান হাদি ‘লাইফ সাপোর্টে’ রয়েছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় তাকে গুলি করা হয়।
এ ঘটনার ঠিক তিন দিন আগেও জীবন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘কোনো রাজনীতিবিদের মৃত্যু তার ঘরের ভেতর হতে পারে না। যিনি বিপ্লবী–সংগ্রামী, তার মৃত্যু হবে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, রাজপথে—একটা গ্লোরির মৃত্যু।’
সাক্ষাৎকারে হাদি বলেছিলেন, ‘জীবন নিয়ে তো শঙ্কা আছে। কিন্তু আমার কাজে আমাকে সারাদিনই একা ঘুরতে হয়। কখনো কখনো হয়তো দশটা ছোটভাই থাকে, আবার কখনো কখনো সারাক্ষণই আমি একা ঘুরতে থাকি। হায়াত–মওতের মালিক আল্লাহ। ন্যূনতম সিকিউরিটি নিয়ে চলা সুন্নাহ। আমার মা স্বাভাবিকভাবেই কান্নাকাটি করে, আমার পরিবার উদ্বিগ্ন থাকে। কিন্তু আমি আমার মাকে বলেছি, দেখ—আমরা একটা লড়াইয়ে নেমেছি। কোনো রাজনীতিবিদের বাসায় মৃত্যু হতে পারে না। এটা কোনো ভালো মৃত্যু না। যিনি রাজনীতি করেন, লড়াই করেন, যিনি বিপ্লবী–সংগ্রামী—তার মৃত্যু হবে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, তার মৃত্যু হবে রাজপথে, একটা গ্লোরির মৃত্যু।’
হাদি বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে এই স্বপ্নটা দেখি যে, একটা তুমুল মিছিল হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। সেই মিছিলে আমি আছি। কোনো একটা বুলেট এসে আমার বুকটা বিদ্ধ করে দিয়েছে এবং আমি হাসতে হাসতে শহীদ হয়ে গেছি। সবাই যখন মৃত্যুটাকে ভীষণ ভয় পায়, আমি তখন আল্লাহর কাছে সন্তুষ্টি নিয়ে পৌঁছাতে চাই। ইনসাফের হাসি নিয়ে আমি আমার আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে চাই।’
হাদির মতে, ৫০ বছর বেঁচেও দেশ, রাষ্ট্র, জাতি, উম্মাহর জন্য কোনো ইমপ্যাক্ট তৈরি করতে না পারার চেয়ে পাঁচ বছর বেঁচে আগামী ৫০ বছরের ইমপ্যাক্ট তৈরি করাই সাফল্য।