ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুর জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে জেলার সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, শরীয়তপুরের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও জীবনধারা ঢাকার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। তাই তারা ঢাকা বিভাগের অংশ হিসেবেই থাকতে চান।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঢাকা–শরীয়তপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। ঘণ্টাব্যাপী অবরোধে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
‘জাগো শরীয়তপুর’ ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শরীয়তপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। তারা হাতে ব্যানার–ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দেন ‘জাগো জাগো শরীয়তপুর, যাবোনা ফরিদপুর’।
মানববন্ধনে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন, প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুরকে জুড়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। অথচ শরীয়তপুরের মানুষের আত্মমর্যাদা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ঢাকার সঙ্গেই জড়িত। ইতিহাসের দিক থেকে, ভৌগোলিক যোগাযোগের দিক থেকেও শরীয়তপুর ঢাকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তাই আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকতে চাই।
স্থানীয় যুবক আমিনুল ইসলাম জিতু বলেন, ঢাকা বিভাগ থেকে শরীয়তপুরকে আলাদা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি করা হলে মানুষের আবেগ–অনুভূতিতে আঘাত হবে। তাই সরকারের কাছে দাবি শরীতপুরকে যেন ফরিদপুর বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা না হয়। আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকতে চাই।
বক্তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানান, শরীয়তপুর জেলাকে ফরিদপুর বিভাগে অন্তর্ভুক্ত না করে ঢাকা বিভাগেই রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হোক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সমন্বয়ক ইমরান আল নাজির বলেন, আমরা ঢাকার সঙ্গে যাতায়াত করি। চিকিৎসা থেকে শুরু করে পড়াশোনা সবকিছুই ঢাকাকে কেন্দ্রিক। হঠাৎ করে ফরিদপুর বিভাগে নেয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যাবে না। ঢাকা বিভাগের সঙ্গে শরীয়তপুরের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক বন্ধন ঢাকার সঙ্গে অটুট। এই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হলে আমরা কঠোর কর্মসুচি দিতে বাধ্য হব।
তরুণ আল আমিন হোসেন বলেন, ঢাকা বিভাগের অংশ হিসেবে আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। তাই আমরা চাই, শরীয়তপুর যেন ঢাকার সঙ্গেই থাকে।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।মানববন্ধনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিককর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সালাউদ্দিন রুপম/এজে/দীপ্ত সংবাদ