বিয়ের ফাঁদে ফেলে শারিরীক সম্পর্কের পর আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে সান্টু বিশ্বাস (৩৯) নামে এক ভুয়া মেজরকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)। এ সময় তার কাছ থেকে অপরাধের কাজে ব্যবহৃত তিনটি ফোন উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সিপিসির একটি দল গাজীপুর চৌরাস্তাসংলগ্ন অনুপম সুপার মার্কেট অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার সান্টু বিশ্বাস যশোরের কেশবপুরের সাহাপাড়ার শ্যামল বিশ্বাসের ছেলে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান।
সিআইডি সূত্র জানায়, স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর দুই সন্তান নিয়ে গাজীপুরে বসবাস করছিলেন ভুক্তভোগী ওই নারী। ২০২১ সালে তার সঙ্গে পরিচয় হয় সান্টু বিশ্বাসের। তিনি নিজেকে একজন মুসলিম এবং মেজর পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তার পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে সেনা কর্মকর্তা ছাড়াও ঢাকা–যশোর রুটের যশোর ট্রাভেলস নামক পরিবহন ও বিশ্বাস গার্মেন্টসের মালিক হিসেবে পরিচয় দেন। সান্টু বিশ্বাস তার কথা দিয়ে ওই নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে বিবাহ বন্ধনের মিথ্যা ডকুমেন্ট তৈরি করে তাতে স্বাক্ষর নিয়ে নেন।
এরপর স্বামী–স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারা বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। এ সময় সান্টু বিশ্বাস গোপনে তাদের ব্যক্তিগত ভিডিও ও ছবি ধারণ করে রাখতেন। সান্টু প্রাতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে শামীমার কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেন।
এক সময় শামীমা বুঝতে পারেন যে, সান্টু বিশ্বাস আসলে কোনো সেনা কর্মকর্তা নয়, বরং প্রতারক। একপর্যায়ে তার জালিয়াতি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শামীমা সান্টু বিশ্বাসের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তবে, সান্টু বিশ্বাস এখানেই থেমে না থেকে, কিছুদিন পর শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তার অশালীন ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি দেন।
২০২৪ সালের ৮ মে, সান্টু বিশ্বাস শামীমা ও তার ছেলের মোবাইলে কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে হুমকি দেন, যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা না পাঠানো হয়, তবে এসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হবে বলেও জানান।
এ ঘটনার পর শামীমার ছেলে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে লালবাগ, ডিএমপি থানায় গত ১১ জুন পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করেন। মামলাটির তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করার পর অভিযুক্ত সান্টু বিশ্বাসকে গাজীপুর হতে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়তি থাকার সত্যতা স্বীকার করেছেন।