বিজ্ঞাপন
শনিবার, আগস্ট ১৬, ২০২৫
শনিবার, আগস্ট ১৬, ২০২৫

আনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রাম–ঢাকা পাইপলাইনে তেল পরিবহন শুরু

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে রাজধানী ঢাকায় পাইপলাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হয়েছে। দেশের ইতিহাসে সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তিনির্ভর এই প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ সাশ্রয় ছাড়াও স্বল্প সময়ে পাইপলাইনে তেল পরিবহন সম্ভব হবে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায় পদ্মা ওয়েল কোম্পানির ডেসপাস টার্মিনালে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত তেল পরিবহণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বার্ষিক খরচ প্রায় ৩২৬ কোটি টাকা। একই পরিমাণ তেল পাইপলাইনে সরবরাহ করতে খরচ হবে মাত্র ৯০ কোটি টাকা। ফলে বছরে অন্তত ২২৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া সিস্টেম লস ও চুরি ঠেকানোর মাধ্যমে অর্থ সাশ্রয় আরও বাড়বে। কর্মকর্তারা বলছেন, সাশ্রয়ের পরিমাণ বছরে বেড়ে আড়াই হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে।

বিপিসির বাস্তবায়নে এবং সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের নির্মাণে ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন চট্টগ্রাম থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত। পাইপলাইনটি ২২টি নদী ও খাল অতিক্রম করেছে এবং এর সঙ্গে নয়টি স্টেশন ও আধুনিক ডিপো নির্মিত হয়েছে।

উদ্বোধনের পর থেকে এই পাইপলাইন ব্যবহার করে তিনটি তেল বিপণন কোম্পানি জ্বালানি তেল সরবরাহ করবে। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লার বরুড়া হয়ে তেল যাবে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ঢাকার ফতুল্লায়। কুমিল্লার বরুড়ায় স্থাপন করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ অটোমেটেড ডিপো। এই ডিপো থেকে চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সন্নিহিত অঞ্চলের প্রয়োজনীয় তেল সরবরাহ করা হবে।

ডিপোতে তেল গ্রহণ ও সরবরাহ সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হবে কম্পিউটারাইজড প্রযুক্তিতে। তেলের ওজন, তাপমাত্রা এবং সরবরাহ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত ও মনিটর করা হবে।

বিপিসি সূত্র জানায়, দেশের চাহিদার ৭০ লাখ টনের অন্তত ৩০ লাখ টন ব্যবহার হয় ঢাকা ও কুমিল্লা অঞ্চলে। এসব তেল বেশিরভাগ বেসরকারি অয়েল ট্যাংকারের মাধ্যমে নৌপথে পরিবাহিত হয়। এতে কোটি কোটি টাকার তেল চুরি ও অনিয়ম ঘটে। ট্যাংকারে পরিবহণের ক্ষেত্রে শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ সিস্টেম লস বিপিসি মেনে নেয়। বছর শেষে এই ক্ষতি বিশাল অঙ্কে দাঁড়ায়। পাইপলাইন নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য ছিল এই সিস্টেম লস ও চুরি কমানো।

পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ মেট্রিকটন এবং বছরে সর্বোচ্চ ৫ মিলিয়ন মেট্রিকটন তেল পরিবহন সম্ভব হবে। আগে নৌপথে ট্যাংকারে নিতে লাগত ৪৮ ঘণ্টা, এখন সময় কমে ১২ ঘণ্টা। ফলে বিপিসির বার্ষিক পরিবহণ খরচ ৩২৬ কোটি টাকা থেকে নেমে আসবে মাত্র ৯০ কোটি টাকায়।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, যেখান থেকে পুরো পরিবহণ প্রক্রিয়া ও নিরাপত্তা ২৪ ঘণ্টা মনিটর করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হক জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি লিটার ডিজেল কোনো ক্ষতি ছাড়াই পরিবহণ সফল হয়েছে। তিনি বলেন, এখন রিজার্ভার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিপোতে দ্রুত ও নিরাপদে তেল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।

২০১৮ সালে ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকায় অনুমোদিত এ প্রকল্প করোনা পরিস্থিতিতে বিলম্বিত হয়ে চলতি বছরের মার্চে শেষ হয়েছে। প্রকল্পের বাড়তি খরচ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More