পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ও মধুর শব্দের নাম ‘মা’। আজ ‘বিশ্ব মা দিবস’।
যুক্তরাষ্ট্রে সূচনা হলেও বর্তমানে বাংলাদেশসহ প্রায় সারা বিশ্বেই প্রতি বছর ‘মে মাসে‘র দ্বিতীয় রবিবার দিবসটি পালিত হয়।
কবির ভাষায়– ‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই/মায়ের চেয়ে নাম যে মধুর, ত্রিভুবনে নাই।’ কালে কালে একটি কথাই সত্যিতে পরিণত হয়েছে আর তা হচ্ছে– পৃথিবীতে সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয় যে শব্দ বা সম্পর্ক পরিচিতি পেয়েছে, তা হল ‘মা’।
মাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে কোনো দিনক্ষণের প্রয়োজন হয় না। প্রতিটি মায়েরই সন্তানের ভালোবাসা প্রাপ্য প্রতিদিনই। মায়ের সঙ্গে সন্তানের আত্মিক বন্ধন জন্ম–জন্মান্তরের।
পৃথিবীর সকল যুগের সকল ধর্মে ‘মা‘ সম্মান রাখা হয়েছে সবচেয়ে উঁচুতে।
পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানুষকে তার মা–বাবার সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভধারণ করে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার শোকরিয়া ও তোমার মা–বাবার শোকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা লোকমান, আয়াত: ১৪)।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষায় ‘মা’ ডাকের শব্দগুলোর মধ্যেও আছে উচ্চারণগত অদ্ভুত এক মিল। সবগুলো শব্দের শুরুই ‘এম’ অথবা ‘ম’বর্ণটি দিয়ে। জার্মান ভাষায় ‘মাট্টার’, ওলন্দাজ ভাষায় ‘ময়েদার’, ইতালিয়ান ভাষায় ‘মাদর’, চীনা ভাষায় ‘মামা’, প্রাচীন মিশরীয় ভাষায় ‘মাত’, সোয়াহিলি ভাষায় ‘মামা’ এবং আফ্রিকান, হিন্দি ও বাংলা ভাষায় ‘মা’।
‘মা’ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘মম’, যা পূর্বে ব্যবহৃত শব্দ ‘মাম্মা’র পরিবর্তিত রূপ। ধারণা করা হয়, ইংরেজি শব্দ মাম্মা এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘মাম্মা’ থেকে। যা ‘স্তন’ বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। এই শব্দ থেকে ‘ম্যামেল’ উৎপত্তি। যা কিনা স্তন্যপায়ী প্রাণীর ইংরেজি প্রতিশব্দ।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রে ‘মা দিবস‘ পালনের প্রচলন শুরু হয় আমেরিকান সমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্ড হোই নামে এক নারীর হাত ধরে। ১৮৭০ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়া একটি ঘোষণাপত্র লেখেন। এটি ‘মাদারস ডে প্রোক্লেমেশন‘ নামে পরিচিত ছিল।
তবে বর্তমানে প্রচলিত মা দিবসের সূচনা হয় ১৯০৮ সালে। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার ‘মা দিবস‘ হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবেও ঘোষণা করা হয়।
এসএ