জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ণ ও বিভিন্ন পরিবেশগত কারণে বিশ্বের অনেক শহরেই বায়ুদূষণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। সেই তালিকায় দীর্ঘদিন ধরেই উপরের দিকে অবস্থান করছে মেগাসিটি ঢাকা। আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুদূষণ পরিস্থিতি আজও ভয়াবহ।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ছিল ২৬৬। এটি ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে এবং এদিন ঢাকাকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে আইকিউএয়ার।
একই সময়ে ভারতের দিল্লি ২৫৪ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় এবং ভিয়েতনামের হ্যানয় ২৫৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। পাকিস্তানের করাচি শহর ১৯৫ স্কোর নিয়ে চতুর্থ এবং ভারতের কলকাতা ১৮৭ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
গতকাল রবিবার (৫ জানুয়ারি), সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ৪৪৫, যা বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছিল। এদিন দ্বিতীয় স্থানে ছিল ইরাকের বাগদাদ (৪৪৪), তৃতীয় ছিল করাচি (২৪৮), চতুর্থ ছিল হ্যানয় (২১৬) এবং পঞ্চম ছিল মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর (২১২)।
বায়ুর মান নির্ধারণের জন্য একিউআই স্কোরকে ব্যবহার করা হয়। এর বিভিন্ন মাত্রা ও অর্থ নিম্নরূপ। ০–৫০ ভালো বায়ু, ৫১–১০০ মাঝারি, ১০১–১৫০ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১–২০০ অস্বাস্থ্যকর, ২০১–৩০০ খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১–৪০০ ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে)।
একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০–এর মধ্যে থাকলে শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের বাড়ির ভেতরে থাকতে এবং অন্যান্যদের বাইরে কার্যক্রম সীমিত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। স্কোর ৩০১–এর ওপরে গেলে তা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।
বিষেশজ্ঞদের মতে, ঢাকার ভয়াবহ বায়ুদূষণের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– যানবাহনের ধোঁয়া,,নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলা, শিল্পকারখানার নির্গত বর্জ্য, বায়ুর গতির কমে যাওয়া, তাপমাত্রার ওঠানামা এবং অন্যান্য আবহাওয়াগত কারণ।
তাদের মতে, এসব কারণে ঢাকার বায়ুদূষণ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে, যা শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, শ্বাসনালীর রোগ, হৃদরোগসহ নানা ধরনের গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে জনস্বাস্থ্যের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।