কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ‘চিফ অ্যাডভাইজার–জিওবি’ নামোর একটি ফেসবুক পেজে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তৌহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেসময় তার দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তার সরকার হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং মানবাধিকার রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ লক্ষ্যে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য গঠিত বিভিন্ন কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যা দ্রুত পর্যালোচনা করা হবে।
এদিকে ঘটনার জেরে কুমিল্লায় সংশ্লিষ্ট সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৩১ জানুয়ারি রাতে যৌথ বাহিনী সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে তৌহিদুল ইসলামকে আটক করে। পরদিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনার সঠিক কারণ উদ্ঘাটনের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইনের আওতায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল মালিক গণমাধ্যমকে জানান, যৌথ বাহিনী তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার সময় তিনি অচেতন ছিলেন। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।
নিহতের পরিবারের দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। চিকিৎসক এবং স্বজনদের ভাষ্যমতে, তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল।
তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন এবং পেশায় চট্টগ্রাম বন্দরের একটি শিপিং এজেন্টে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তার বাবা মোখলেছুর রহমানের মৃত্যুর পর কুলখানিতে যোগ দিতে তিনি বাড়িতে আসেন।
এম/আল