শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

আইইউবির ২৪তম সমাবর্তনে সনদ পেল ২৩৪৯ শিক্ষার্থী

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

 

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর ২৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৮ নভেম্বর) পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশচায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব এবং সনদ প্রদান করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি। সমাবর্তনে মোট ২,৩৪৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয় যাদের মধ্যে ১,৮৬০ জন স্নাতক ও ৪৮৯ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের। কৃতিত্বপূর্ণ ফল অর্জনকারী দুই স্নাতক শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলরস গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলছি মডিউলার এডুকেশনের দিকে যেতে। আমি ডিগ্রি অর্জন করলাম, কিন্তু পাঁচ বছর পরে এই বিদ্যা আমার কাজে নাও লাগতে পারে। আমি তখন নতুন করে আরেকটা ডিগ্রি নেবার জন্য ক্যাম্পাসে ফেরত আসতে পারবো না। সেজন্য ব্লেন্ডেড এডুকেশন মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। এর সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের শিক্ষার্থীরা যার যার কাজের জায়গায় থেকেই নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করে নিতে পারবে। নিজেদেরকে ক্রমাগত রিস্কিল এবং আপস্কিল করতে পারবে শর্ট কোর্স, ডিপ্লোমা নানা কিছুর মাধ্যমে।”

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তাঁর এ প্রত্যয় বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি নাগরিক, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে স্মার্ট ভূমিকা পালন করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রশাসন এবং অর্থনীতিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রকেই স্মার্ট করে তুলতে হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই স্মার্ট নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য চৌকষ ভূমিকা পালন করতে হবে।”

সমাবর্তন বক্তা সেলিনা হোসেন বলেন, “কোনো মানুষের জীবনই সহজ নয়। জীবন চলার পথও সরলরেখার মতো নয়। অনেক উঁচুনিচু থাকে, উত্থানপতন থাকে, খানাখন্দ থাকে, কখনো পাহাড় ডিঙিয়ে যেতে হয়, কখনো সমুদ্র পাড়ি দিতে হয়, নদীনালাখালবিল তো প্রচুর। অর্থাৎ, পথটা অত আরামদায়ক নয়, বরং প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়। ভয় পেয়ো না, এগুলো সবার জীবনেই থাকে। তোমরা যত বাধাবিপত্তি পেরুবে, তত বেশি সাহসী এবং শক্তিশালী হবে।”

আইইউবি ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব আব্দুল হাই সরকার বলেন, “শিক্ষার্থীর ভূমিকা থেকে আজকে আপনারা নতুন এক ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন – তা হলো অ্যালামনাই। মনে রাখবেন, আইইউবির সাথে এখানেই আপনাদের সম্পর্ক শেষ হচ্ছে না। বরঞ্চ আজ থেকে আরো বড় পরিসরে, আরো বড় মঞ্চে আপনারা আইইউবি পরিবারের সকল অর্জন এবং সাফল্য নিয়ে গর্ব করার সুযোগ পাচ্ছেন। আমি আশা করবো আইইউবির আলোর মশাল আপনারা দেশেবিদেশে সমুজ্জ্বল রাখবেন।”

এডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (ইএসটিসিডিটি)-এর চেয়ারম্যান মিসেস নিলুফার জাফরুল্লাহ বলেন, “এবারের সমাবর্তনের অনেক শিক্ষার্থীই বিশ্বের প্রখ্যাত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য গমন করেছে। অন্যরাও স্বস্ব ক্ষেত্রে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। তাদের অনেকেই শিক্ষার্থী অবস্থায় ক্রীড়া ও অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রমে আইইউবির জন্য সম্মান বয়ে এনেছে। আমি আশা করবো আইইউবির বর্তমান এবং ভবিষ্যত শিক্ষার্থীরাও তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করবে।”

আইইউবির উপাচার্য তানভীর হাসান, পিএইচডি বলেন, “বাংলাদেশ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে এবং আমাদের অর্থনৈতিক সাফল্য নিয়ে এখন সারা পৃথিবীতে কথা হয়। একটি দায়িত্বশীল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপকল্প ২০৪১এর আওতাধীন টেকসই উন্নয়ন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চলমান প্রক্রিয়ায় আইইউবি অবদান রেখে চলেছে। তারই অংশ হিসেবে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের উদার কলা বা লিবারেল আর্টস বিষয়ে একটি দৃঢ় ভিত্তি দেয়ার চেষ্টা করি। পাশাপাশি আমরা তাদের প্রযুক্তিগত দিক থেকে দক্ষ, বৈশ্বিকভাবে সচেতন এবং পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠতে উৎসাহ প্রদান করি।”

অনুষ্ঠানে আইইউবির কোষাধজ্ঞ খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার ও পাঁচ অনুষদের ডিনবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইইউবির উপউপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, পিএইচডি। উপস্থাপনায় ছিলেন আইইউবির রেজিস্ট্রার মো. আনোয়ারুল ইসলাম, পিএইচডি।

ভ্যালেডিক্টোরিয়ান মনোনীত হন চ্যান্সেলরস গোল্ড মেডেল পাওয়া লাইফ সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী সারাফ সাইয়ারা। অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী এলিসেন ক্লডিয়া ডিয়াজও চ্যান্সেলরস গোল্ড মেডেল পান। অলরাউন্ডার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন স্যোশাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শুদ্ধা শ্রীময়ী দাশ। স্নাতক পর্যায়ে অসাধারণ ফলাফলের জন্য ওয়াসিউল হক, আসিমা কামাল মৌনী, নাওয়ার নেছার খান, লাবিবা ফাইরুজ, ফাতিমা সাধরী, রেজাউল খান আহাদ, তাজওয়ার বিন সালেহ এবং স্নাতকোত্তার পর্যায়ে অসাধারণ ফলাফলের জন্য মোঃ রিজানুল হক, মো: ইফতাদুল ইসলাম সাকিব, ফারলিনা আহমেদ, জাহানারা তারিক, মনিকা কবির ও মোঃ মেহেদি হাসানকে পুরষ্কৃত করা হয়।

অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতির পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে সফল শিক্ষার্থীদেরও সম্মাননা দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডর জন্য সম্মাননা পান এস. এম. শাহারিয়ার কবির, খেলাধুলায় ইনতিশার মোস্তফা চৌধুরী ও তানিন রহমান তুষার, এবং সমাজসেবায় নুসরাত তানজিমা আহম্মেদ ও শারনিলা নুজহাত কবির।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউবির সম্মানিত ট্রাস্টিবৃন্দ, অভিভাবক এবং আইইউবির শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ। মূল অনুষ্ঠান শেষে এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয় যেখানে সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় দুই শিল্পী কণা এবং প্রীতম।

 

আল/ দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More