দীর্ঘ ২ বছর নৃশংস গণহত্যা চালানোর পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে অবশেষে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা কয়েকটি এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েল গণমাধ্যম বরাতে এ খবর জানিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
ইসরায়েল গণমাধ্যম চ্যানেল ১২–এর প্রতিবেদন মতে, আজ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় উল্লেখিত এবং হামাস ও ইসরায়েল সম্মত হওয়া এলাকাগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল সেনাবাহিনী রাফাহ ও খান ইউনিস (দক্ষিণ) এবং গাজা উত্তরের এলাকা থেকে পূর্ব দিকে প্রত্যাহার করে ইসরায়েল সীমান্তের দিকে সরে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু সামরিক ব্রিগেড এবং ডিভিশন গাজার কেন্দ্র থেকে সরে এসেছে।
ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেনা প্রত্যাহার করা হলেও গাজা উপত্যকার প্রায় ৫৩ শতাংশ এলাকা ইসরায়েল সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গাজা ভূখন্ড থেকে ৩ ধাপে সেনা প্রত্যাহার করা হবে।
এদিকে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ‘পর্যবেক্ষণ’ করার জন্য কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ টাস্কফোর্সের অংশ হিসেবে ইসরায়েলে ২০০ মার্কিন সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
মিশরের শারম আল–শেখ শহরে তিনদিনের পরোক্ষ আলোচনার পর গত বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। মার্কিন তত্ত্বাবধানে তুর্কি, মিশর ও কাতারের প্রতিনিধিরা এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ভোরে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরাইল ও হামাস তার যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় পরিকল্পনার ‘প্রথম ধাপে’ সম্মত হয়েছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি অনুমোদন করেছে ইসরাইলি সরকার। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এক্স অ্যাকাউন্টে এক ঘোষণায় বিষয়টি জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছেন বলে তথ্য প্রকাশ করেছে গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আর ইউনিসেফ তথ্য মতে, এ যুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি শিশু।
এসএ