অপহরণের সাড়ে ৬ মাস পরে তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ছয় বছরের শিশু সোয়াইব হোসেন‘কে খুলনা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) পাবনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ১৯ এপ্রিল খুলনা রূপসা ফেরিঘাট এলাকায় ভিক্ষা করতে দেখে সোয়াইব হোসেন‘কে উদ্ধার করা হয় এবং অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশু সোয়াইব জানায়, রাতে তাকে একটি কক্ষে বন্দী করে রাখতেন বিপ্লব। সহজে কিছু খেতে দিতেন না। শরীরে দাঁতের কামড় বসিয়ে চামড়া তুলে ফেলতেন। সারা শরীরে দেওয়া হতো সিগারেট ও কয়েলের আগুনের ছ্যাঁকা। বাম হাতের একটি আঙুলের নখ প্লায়ার্স দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। দিনের বেলায় বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে তাকে দিয়ে ভিক্ষা করানো হতো।
শিশুর মা সোহানা জাহান বলেন, ‘পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে সেদিন বিপ্লব আমার কাছ থেকে ছেলেটাকে নিয়ে যায় বিস্কুট কিনে দেবে বলে। তারপর থেকে ছেলেকে আর খুঁজে পাইনি। পরে সে (বিপ্লব) ফোন করে জানায় যে আমার ছেলেকে সে অপহরণ করেছে। তারপর থেকে তার ফোনও বন্ধ। এরপর সদর থানায় গিয়ে ঘটনা জানিয়ে জিডি করি।’
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগ প্রধান মাসুদুর রহমান প্রিন্স বলেন, ‘দিনের পর দিন না খাইয়ে রাখা ও অব্যাহত শারীরিক নির্যাতনের কারণে শিশু সোয়াইবের শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তার হাতের একটা আঙুল কেটে ফেলতে হবে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি। ঠিকমতো চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে আশা করছি দুই মাসের মধ্যে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে।’
পাবনা সদর থানা পরিদর্শক (তদন্ত) এ এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মূলত অপহরণ করা শিশুটিকে একপ্রকার প্রতিবন্ধী বানিয়ে তাকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন অভিযুক্ত বিপ্লব। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে অভিযুক্ত বিপ্লবকে ১৯ এপ্রিল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর পাবনা সদর উপজেলার চক ছাতিয়ানী এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে সোয়াইব হোসেন‘কে অপহরণ করা হয়।
এসএ