সম্প্রতি দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো–অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। তারা এসব করে দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো–অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডেরের সম্মান ক্ষুণ্ণ করতে চায়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বুধবারে (২১ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরীফিকেশন ও সেক্রেটারি, ইমানুয়েল বাপ্পী মন্ডল যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, হাউজিং সোসাইটির উন্নয়নের এই সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশের বর্তমান উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিকে কুক্ষিগত করে কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমে সোসাইটির নামে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। যারা হাউজিং সোসাইটির সদস্য নয় এমন ব্যক্তিগণও সোসাইটির সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য নানা রকম মিথ্যা কুৎসা রটিয়ে উসকানি দিচ্ছেন। যা হাউজিং সোসাইটি ও সম্মানিত সদস্যদের বৃহত্তর স্বার্থের পরিপন্থী।
সম্মানিত সদস্য ও শুভাকাঙ্খাীদের প্রতি জোরালো আবেদন, আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে বরং যারা এসব হীন কাজগুলো করে যাচ্ছেন; তাদের প্রতি সোসাইটির উন্নয়নের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার অনুরোধ করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন–ইস্টারসহ বিভিন্ন উৎসবে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের পাশাপাশি দেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় বিভিন্ন মন্ত্রী, ব্যক্তিবর্গদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও কুশলাদি বিনিময় করতে হয়। ওই সকল ছবি ব্যবহার করে কিছু অপশক্তিরা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সোসাইটিতে অর্থ গচ্ছিত আছে উল্লেখ করেও বিভিন্ন হলুদ সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করছে।
সাগর কোড়াইয়া বলেন, হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান মি. আগষ্টিন পিউরীফিকেশন দেশের সর্ববৃহৎ সমবায় প্রতিষ্ঠান কাল্বের বিগত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিপুল ভোটে জয়ী হন। কালবের বিগত বোর্ডের চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি এবং অন্যান্য বোর্ড সদস্যদের নানাবিধ অপকর্ম ও অর্থ তছরূপের প্রমাণ পাওয়া গিয়েেেছ। এই্ ঘটনাকে চাপা দিতেই হাউজিং সোসাইটির বিগত বোর্ডে কতিপয় দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে আতাত করে নামসর্বস্ব হলুদ মিডিয়ার সাংবাদিকদের ব্যবহার কিছু কিছু অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে সোসাইটির ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে হয়েছে, দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো–অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিঃ ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ এপ্রিল একটি খ্রিষ্টমন্ডলীর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জুন সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন লাভ করে। ঢাকা শহরে খ্রিষ্টান পরিবারের বসবাসের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনীর তৎকালীন ঢাকার আর্চবিশপ মাইকেল রোজারিও প্রতিষ্ঠানটি গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
হাউজিং সোসাইটির সুদীর্ঘ পথচলায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সমবায়ী ব্যক্তিগণ দায়িত্ব পালন করেছেন। সোসাইটির সকল সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।দায়িত্ব নিয়েই বর্তমান বোর্ড সোসাইটির সদস্যদের কল্যাণে বহু উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করেছেন। সোসাইটির এই উন্নয়নে সদস্যদের অবদান ছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও অনস্বীকার্য।
তিনি বলেন, বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নিয়ে হাউজিং সোসাইটির ২২২ কোটি টাকা সম্পদ–পরিসম্পদকে আজ কয়েক হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। অপরদিকে ১২টি ফ্ল্যাট প্রকল্প থেকে ২০৩টি ফ্ল্যাট প্রকল্পে উন্নীত করা হয়েছে যেখানে ১৫৯৬টি পরিবার বসবাসের সুযোগ পাবেন। বর্তমানে ৪০টি ফ্ল্যাট বিল্ডিং নির্মাণ শেষে ৪২৬টি পরিবার বসবাস করছেন এবং আরও ১৯টি ফ্ল্যাট প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে আরও দুইশতাধিক পরিবার বসবাসের সুযোগ পাবেন। প্লট প্রকল্পেও তাদের দূরদর্শিতায় ২৭৭ বিঘা জমি হতে এক হাজার বিঘা জমিতে উন্নীত করেছেন এবং ৭৭টি প্লট প্রকল্পে মোট প্লটের সংখ্যা ৪৪৯০টি দাঁড়িয়েছে। হাউজিং সোসাইটির নিজস্ব জমিতে প্রধান কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। টেকসই ও উৎপাদনমূখী উন্নয়নে অবদান রাখতে আয়মূলক কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। বিশেষ করে রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট, থিমপার্ক, প্রবীণ নিবাস, মা–শিশু হাসপাতাল, ছাত্রী হোস্টেল, বাণিজ্যিক–কাম–আবাসিক প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ঢাকার পূর্বাচলে নতুন শহরে, উত্তরা মডেল টাউন, ধানমন্ডি, বসুন্ধরার মতো স্থানে জমি ক্রয় করে খ্রিষ্টান বসতি স্থাপনে ব্যবস্থা করা হয়েছে। অচিরেই অটোব্রিক্স, মিনারেল ওয়াটার প্ল্যান্ট, এলপিজি ফিলিং স্টেশন, কনভেনশন হল প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হবে। আয়মূলক এ সকল প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ফলে সমাজের বেকার সমস্যা নিরসনে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।অপরদিকে সারা বছরই সদস্যদের প্রয়োজনে ঋণকার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, হাউজিং সোসাইটির সকল প্রকার কার্যক্রমগুলো সমবায় আইন, বিধি ও উপ–বিধি যথাযথভাবে মেনে বার্ষিক অডিট, বার্ষিক সাধারণ সভা পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতি অর্থবছরে সদস্যদের ডিভিডেন্ট ও রিবেট প্রদান করা হচ্ছে। হাউজিং সোসাইটি মন্ডলীসহ সমাজে স্কুল–কলেজ, সংগঠনের মাধ্যমে সামাজিক কাজে অবদান রেখে চলছে। এছাড়াও সারাদেশের সমবায় সমিতিগুলোর সঙ্গে হাউজিং সোসাইটির রয়েছে সুম্পর্ক।
উল্লেখ্য যে, প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন–ইস্টারসহ বিভিন্ন উৎসবে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের পাশাপাশি দেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় বিভিন্ন মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিবর্গদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও কুশলাদি বিনিময় করতে হয়। ঐ সকল ছবি ব্যবহার করে কিছু অপশক্তিরা মিলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সোসাইটিতে অর্থ গচ্ছিত আছে উল্লেখ করেও বিভিন্ন হলুদ সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করছে।
সোসাইটির পক্ষ থেকে সকলকে দৃঢ়তার সঙ্গে বলা হচ্ছে যে, সোসাইটি সমবায় সমিতি আইন ও বিধিমালা এবং সোসাইটির উপ–বিধি মোতাবেক সমস্ত কার্য সম্পাদন করে থাকে। আমানত গ্রহণের ক্ষেত্রে সোসাইটি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্য ব্যতীত অন্য কারো নিকট হতে কোন আমানত গ্রহণ করা হয় না এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ নানা পুলিশ কর্মকর্তাদের নামে সোসাইটিতে কোন অর্থ গচ্ছিত রাখা হয়নি। সম্মানিত সদস্যদের এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমসহ সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে যে বা যারা সোসাইটির সুনাম ক্ষুন্ন করছেন আমরা তাদের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। অনতিবিলম্বে সোসাইটির নামে এই সকল অপ্রপ্রচার বন্ধে আমরা জোরালোভাবে আহ্বান করছি। অন্যথায় দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।