৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন এবং রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিরোধী দলীয় সাবেক চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক।
তিনি বলেছেন, ‘স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর পরিকল্পিতভাবে ঐতিহাসিক দিনগুলোকে জনগণের দৃষ্টির অন্তরালে নিয়ে গেছেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাই দাবি থাকবে তারা ৭ নভেম্বরকে পূর্বের মত রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদ আয়োজিত ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সরকারি ছুটি পুনর্বহালের দাবিতে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জয়নুল আবদীন ফারুক এসব কথা বলেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা মো. রমীজ উদ্দিন রুমি এবং সঞ্চালনা করেন আরাফাত রহমান আবির। এ সময় বক্তব্য দেন এনডিপি’র মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, কৃষক দলের নেতা ভিপি ইব্রাহীম, মো. রবিউল ইসলাম রবি ও এম. জাহাঙ্গীর আলম, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস.এম মিজানুর রহমান, প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজী, জাগ্রত বাংলাদেশ’র সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, প্রতিবাদ’র সভাপতি মো. ইব্রাহীম হোসেন, বিএনপি নেত্রী এডভোকেট আরিফা সুলতানা রুমা, মাওলানা আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, ৭৫ সালের ৩ নভেম্বর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের এজেন্টরা এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে নস্যাৎ করার জন্য চক্রান্তে লিপ্ত ছিল। অবশেষে ৭ নভেম্বর এ দেশের সিপাহী–জনতা সেই চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং তাদের চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দেয়। এ কারণে দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে।
তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং তিনি দ্রুত বাংলার মানুষকে বহুদলীয় গণতন্ত্র উপহার দেন। শহীদ জিয়া দেশের মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেন। ৭ নভেম্বর পালনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থেই জিয়াকে স্মরণ করা হবে।
তিনি বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, আপনারা দ্রুত নির্বাচন দিন। দেশি–বিদেশি চক্রান্ত প্রতিহত করার জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচিত সরকারের খুব প্রয়োজন। আমরা কখনোই ২০১৪ সালের মতো ১৫২ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করতে চাই না, অথবা ২০১৮ সালের নৈশকালীন নির্বাচনের মতো অনির্বাচিতভাবে জয়যুক্ত হতে চাই না। আমরা চাই ভোট বঞ্চিত জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের প্রিয় ব্যক্তিদের নির্বাচিত করুক এবং যোগ্য ব্যক্তিরা দক্ষতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করুক।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা তোমার পতন হয়েছে। তোমার বাবা বাংলাদেশকে বলতো ‘আমার দেশ’ আর তুমি বলতে ‘আমার বাবার দেশ’। অথচ একটা স্বাধীন দেশকে তোমরা আরেক দেশের তাবেদার বানানোর সব চক্রান্ত সম্পন্ন করেছো। দেশের মানুষ তোমার চক্রান্ত বুঝে ফেলেছে। তোমাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তুমি দিল্লির একটি আশ্রয়কেন্দ্রে কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছো। তোমার অশুভ প্রেতাত্মারা এখনো বিভিন্ন সেক্টরে নিয়োজিত থেকে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। কিন্তু তাদের জানা উচিত দেশের সচেতন জনতা সোচ্চার আছে। তাদের চক্রান্ত কখনোই সফল হবে না।’
বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ বলেন, ৭ নভেম্বরের মতো ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে।
এজে / আল/ দীপ্ত