ব্যস্ত জীবনযাত্রা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও মানসিক চাপের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে হার্ট ব্লক (Coronary Artery Blockage) এখন অনেকেরই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির বাইরে, প্রাচীন চীনা চিকিৎসাশাস্ত্রের আকুপ্রেসার পদ্ধতিতেও হার্ট ব্লকের প্রাথমিক সংকেত শনাক্ত করার সহজ উপায় রয়েছে। মাত্র এক মিনিটের এই পরীক্ষাটি ঘরে বসেই করা যায়।
হার্ট ব্লকের লক্ষণ:
হৃদযন্ত্রে ব্লক থাকলে সাধারণত কিছু শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন—
* বুকে চাপ বা ব্যথা (এনজাইনা)
* শ্বাসকষ্ট
* অতিরিক্ত ঘাম
* মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা
* হাত বা পায়ে অসাড়তা বা ব্যথা
আকুপ্রেসার পদ্ধতিতে হার্ট ব্লক চেক করার উপায়:
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের কিছু নির্দিষ্ট প্রেসার পয়েন্ট চাপ দিয়ে আমরা সহজেই হার্টের কার্যক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।
ধাপ ১: প্রথমে একটি চেয়ারে আরামদায়কভাবে বসুন এবং রিল্যাক্স করুন।
ধাপ ২: ডান হাতের তর্জনী ও মধ্যমা আঙুল ব্যবহার করে বাম হাতের তালুর নিচের অংশে (হাতের কবজির সামনের দিকে) হালকা চাপে ম্যাসাজ করুন।
ধাপ ৩: ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের মধ্যে যদি ব্যথা, চাপে অস্বস্তি, বুক ধড়ফড় করা বা হাতের তালুতে ব্যথা অনুভূত হয়, তবে এটি হার্ট ব্লকের একটি সম্ভাব্য ইঙ্গিত হতে পারে।
ধাপ ৪: একইভাবে পায়ের তালুর মাঝে (হার্ট রিফ্লেক্স পয়েন্ট) চাপ দিয়ে দেখুন। যদি ব্যথা অনুভব করেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
এই পরীক্ষা প্রাথমিক ইঙ্গিত দিতে পারে, তবে এটি চিকিৎসকের নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা বা ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, এনজিওগ্রাম ইত্যাদির বিকল্প নয়। নিয়মিত শরীরের সংকেতগুলো বোঝা এবং সচেতন হওয়া সুস্থ থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
হৃদরোগ প্রতিরোধে করণীয়:
* স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা
* প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা
* মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা
* পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা
* ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করা
হার্ট ব্লক একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা দ্রুত চিকিৎসা না করলে জীবনঘাতী হতে পারে। আকুপ্রেসার পদ্ধতি একটি প্রাথমিক সংকেত চেনার উপায় হতে পারে, তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য অবশ্যই কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি পাঠকদের স্বাস্থ্যসচেতন করতে লেখা হয়েছে, চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়।