শনিবার, অক্টোবর ৪, ২০২৫
শনিবার, অক্টোবর ৪, ২০২৫

স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড

নাটোরের গুরুদাসপুরে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী রিনা খাতুনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী রনি মোল্লাকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দেন।

দন্ডপ্রাপ্ত রনি মোল্লা গুরুদাসপুর উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের হাবিল মোল্লার ছেলে।

নাটোর জজ আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মামলার এজাহার সুত্রে জানান, ২০১২ সালে গুরুদাসপুরের পুরুলিয়া গ্রামের হাবিল মোল্লার ছেলে রনি মোল্লার সাথে বিয়ে হয় নাটোর সদর উপজেলার শিবদুর গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে রিনা খাতুনের। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী সহ শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন। বিষয়টি রিনা খাতুন তার বাবাকে জানালে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে এক লাখ টাকা দেয় রনিকে। এরপর আবারো টাকা দাবী করে নির্যাতন করতে থাকে। এরপর আরো দুই তিনবার টাকা ও গহনা দেয় রিনার বাবা। এভাবে চলার একপর্যায়ে ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রিনার কাছে আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে মারধর করে। বিষয়টি জানিয়ে রিনা তার বাবাকে টাকা দিতে নিষেধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রনি মোল্লা। এনিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রিনাকে ধারালো চাকু দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে এবং পিটিয়ে জখম করে। ঘটনাটি প্রতিবেশীরা দেখে রিনার বাবার বাড়ীতে খবর দেয়। খবর পেয়ে রিনার বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত রিনার বাবা মফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে রিনার স্বামী রনি মোল্লা সহ ৫ জনের নামে গুরুদাসপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর পুলিশ রনি মোল্লাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরন করে। পরে পুলিশ তদন্ত করে মামলায় রনি মোল্লাকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে এবং অন্যদের অব্যহতি দেন। দীর্ঘ ৫ বছর মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে আদালতের বিচারক রনি মোল্লাকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন সেই সাথে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার অর্থ নিহতের বাবা ও মা পাবেন বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবী করেন।

 

মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More