নাটোরের গুরুদাসপুরে স্ত্রীকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ানোর পর মুখে বালিশ চাঁপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী শাহীন হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন বিচারক।
মঙ্গলবার (২৯আগস্ট) দুপুরে নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ শরীফ উদ্দীন এ রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত শাহীন হোসেন উপজেলার মশিন্দা পূর্ব চরপাড়া এলাকার মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে।
নাটোর জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার প্রায় ২০ বছর পূর্বে শাহীন হোসেনের সাথে তাইফুল বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে জানা যায়, শাহীন হোসেনের নিজের কোন ঘর বাড়ি নেই। পরে শ্বশুরের বসত ভিটায় ঘর করে দেন শ্বশুর। এরপর থেকে সেখানেই বসবাস করতো তারা। তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ শুরু হয়। এ নিয়ে শাহীন হোসেন তার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল স্ত্রীকে মারধর করে ঘুমের ঔষধ খাওয়ান স্বামী শাহীন হোসেন। পরে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে মুখে বালি চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে শাহীন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ঘরের কোনায় গর্ত খুড়ে মাঝ রাতে আত্মীয়–স্বজন ও প্রতিবেশীকে ডাকাডাকি করে
জানায় কে বা কারা শিধ কেটে ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে।
বিষয়টি এলাকাসীর সন্দেহ হলে তারা শাহীন হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে শাহীন হোসেন তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার ও শাহীন হোসেনকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই জামাল হোসেন বাদী হয়ে শাহীন হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৫ বছর মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামী শাহীন হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ